‘আমার একটা মাত্র ছেলেকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের কুলাঙ্গাররা। ছাত্রলীগের হাতে রক্ত রঞ্জিত হয়ে আমার ছেলে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করছে।’ অশ্রুশিক্ত চোখে এভাবে ছেলে হত্যার বিচার চেয়েছেন ফাতেমা বেগম।
২০১৬ সালের ১ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে নিহত হন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কুবির প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় খালেদ সাইফুল্লাহর হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মা ফাতেমা বেগম ও বাবা মোহাম্মদ নুরুল আবেদিন।
সংবাদ সম্মেলনে ফাতেমা বেগম বলেন, আমার ছেলের খুনিরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পায় আর আমি এখনো ছেলে হত্যার বিচার পেলাম না। সাবেক ভিসি আব্দুল মঈন, ইমরান কবির তাদের চাকরির ব্যবস্থা করেছে। আমি চাই হত্যায় জড়িত থাকা সকল আসামিদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিল করা হোক এবং এদের মধ্যে যারা চাকরি পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের চাকরি বাতিল করা হোক।
নিহত খালেদ সাইফুল্লাহ কুমিল্লা বিশবিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছেলেকে ছাত্রলীগ করতে জোর করে আলিফ ও মাসুম। আমার ছেলে যদি আসলেই ছাত্রলীগ করত তাহলে আমরা আওয়ামী লীগের আমলে এই হত্যার বিচার পেলাম না কেন। উলটো ছাত্রলীগের নেতা ইলিয়াস হোসেন সবুজ, বিপ্লব চন্দ্র দাস, রেজা ই এলাহি, আলিফ, ফিরোজ, আবু বক্কর সিদ্দিক, সাইফ সোহেল, মাজহারুল ইসলাম হানিফের মাধ্যমে আমাকে বার বার চাপ প্রয়োগ করে আসছে চার্জশিট থেকে নাম তুলে নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আজ ৯ বছর হচ্ছে আমার ছেলে হত্যার। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আমি বারবার নারাজি দিয়ে আসছি। কারণ মূল আসামিদের বাদ দেওয়া হচ্ছে প্রতিবেদনে। আমার দুই মেয়েকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির লোভ দেখানো হয়েছে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। আমরা ছেলের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারব না। আমি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের কাছে ছেলে হত্যার বিচারের দাবি জনাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পিতা মোহাম্মদ আবেদিন বলেন, আমার ছেলে হারানোর ৯ বছর অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু বিচারের কোনো আশা দেখছি না। আমরা সরকারের কাছে ছেলে হত্যার বিচার চাই।
মন্তব্য করুন