রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) প্রশাসনকে বলেই পোস্টার লাগিয়েছে বেরোবি ছাত্রদল। কিন্তু প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলছেন, ‘কে লাগিয়েছে জানি না। এসব কাজ তো আসলে রাতের আঁধারে করা হয়।’
বুধবার (৬ নভেম্বর) সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগিয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভা শেষে এক প্রেস সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বেরোবিতে সব ধরনের লেজুড়বৃত্তিক (দলীয়) রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসবের প্রতিক্রিয়া জানায়। এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জয় রায় বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছিলাম রাজনীতি মুক্ত করে, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভ্রাতৃপ্রেমী করার জন্য আন্দোলন করে শতশত প্রাণ বলি দান দিয়েছে। আমরা চাই না বারংবার অশ্রুসিক্ত এমন পরিস্থিতি আসুক। সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে ডিরেক্ট অ্যাকশন’, ‘রাজনীতির দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান দিয়ে হুঁশিয়ার করতেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবির সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, ক্যাম্পাসে প্রশাসন কর্তৃক লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও রাজনৈতিক পোস্টার লাগানো অপরাধের সামিল সুতারাং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করে।
এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলেছি কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে প্রশাসন বলেছে সারা দেশে যদি লাগায় তাহলে দেখেন আপনারা কি করবেন। তবে প্রশাসনের কে বলেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ডিসক্লোজ করা যাবে না। যেহেতু তারা কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
তিনি বলেন, এখানে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া, না নেওয়ার বিষয় আসেনা। যেহেতু এটা বেরোবি ছাত্রদলের পোস্টার না, পোস্টারে বেরোবি ছাত্রদলের কথা উল্লেখ্য নেই। এটা কেন্দ্রীয় পোস্টার। আমাদের সংগঠনের ১৪টা উইংস আছে এর মধ্যে ছাত্রদল, যুবদলসহ সকলে এই কর্মসূচি পালন করবে। আমরা ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে না। তাছাড়া ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রশাসন থেকে আমরা কোনো গেজেট পাইনি।
কেন আপনারা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে না এর উত্তরে আল আমিন বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গেজেট পাওয়ার পর আমরা এর ব্যাখ্যা দেব। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে ছাত্রলীগের পোস্টেড্ররা রাতের আঁধারে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে আমাদের কয়েক জনের ছাড়া কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘কে লাগিয়েছে জানি না। এসব কাজ তো আসলে রাতের আধারে করা হয়। এটা কারা করলো খোঁজ নিয়ে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাজনীতি তো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এটাতো একবারে যাবে না। এ ধরনের পোস্টার না লাগানোর জন্য আগামীকাল নোটিশ দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.শওকাত আলী বলেন, আমরা বিষয়টার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নিয়েছি। ছাত্র উপদেষ্টা এবং প্রক্টর বিষয়টা কাউন্সেলিং করতেছে। যারা এ ধরনের পোস্টার লাগিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন