বাহাদুর শাহ পার্ক জনমানুষের পার্ক। ঐতিহ্যবাহী বাহাদুর শাহ পার্কে কোনোভাবেই বাণিজ্যক্ষেত্র বা রেস্টুরেন্টে হতে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে ‘মুক্ত থাকুক বাহাদুর শাহ পার্ক : গানে কথায় দখলদারিত্বের প্রতিবা ‘ শিরোনামে বাহাদুর শাহ পার্কে ফুটভ্যান ক্যান্টিন ইজারা বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফোরাম’ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, এটা কল্পনা করা যায় না যে স্বৈরাচারীরা দেশকে কেমন লুণ্ঠন ক্ষেত্র বানিয়ে ছিলো। বিগত সরকারের লোকজন দখল করতে করতে এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, ঐতিহ্যবাহী এই বাহাদুর শাহ পার্ককেও ছাড় দেয়নি। আমরা জানি, সম্রাট বাহাদুর শাহ একজন সম্রাট এবং একজন বিশিষ্ট কবি ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন করার কারণে ব্রিটিশ সরকার তাকে রেঙ্গুনে নির্বাসিত করে ছিল। সেখানেই তাকে কবর দেওয়া হয়। আমি দেখেছি সেখানে ধর্মমত নির্বিশেষ সকল মানুষ আসে তার কবর পরিদর্শনে। আমরা দেখি অনেকেই এখনো এই পার্ককে ভিক্টোরিয়া পার্ক বলে। এই বাহাদুর শাহ পার্কের পরিচিত বাড়ানোর জন্য এখানে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সমাবেশ ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান বলেন, পুরাতন ঢাকার এক মাত্র অক্সিজেন খ্যাত স্থান ব্রিটিশবিরোধী প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিস্তম্ভ শহীদ বেদী। ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক, পুরান ঢাকার হাজার হাজার বাসিন্দাদের হাঁটাহাঁটি ব্যায়াম ও বসার স্থান ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক। পার্কটিতে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের পরিচালনাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক নতুন করে আবার ফুডভ্যান ক্যান্টিন ইজারা দরপত্র আহ্বান করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে আপনারা এমন কাজ করতে পারেন না।
উক্ত সমাবেশ সংগীত পরিবেশন করে জনপ্রিয় ব্যান্ড সমগীত, দ্য কমরেডস, চারকোল, আনন্দলোক, মনের মানুষ, রিসারজেন্স ও অফসাইড; গানে গানে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য এই আয়োজন করা হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এসময় সমাবেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, পুরান ঢাকার লেখক, ছাত্রসহ পুরান ঢাকার বিশিষ্ট নাগরিকরা বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন