প্রায় দেড় বছর আগে মারধর ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাবি শাখার ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ নূর উদ্দিন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর মতিহার থানায় মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
মামলার আসামিরা হলেন, প্রধান আসামি ছাত্রলীগ কর্মী আল নূর জাকারিয়া, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী হামিদ হৃদয়, দর্শন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী টোকন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকী, একই বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী মো. হাবিবুর রহমান এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স ২০১২ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী মোফাজ্জল হক নাসিম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনে মোটরসাইকেল থেকে নামেন মামলার বাদী শেখ নূর উদ্দিন। এ সময় আসামি হাবিবুর রহমান ‘ছাত্রদলের সদস্য হয়ে তুই ক্যাম্পাসে কি করিস’ বলে মারধর শুরু করে। এরপর মোফাজ্জল হক নাসিম পাশ থেকে একটি বস্তা নিয়ে এসে সেখান থেকে লাঠি, রডসহ দেশীয় অস্ত্র বের করে দেয়। তখন সাকিবুল হাসান বাঁশ দিয়ে নূর উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এরপর হামিদ লোহার রড ও টোকন হকিস্টিক দিয়ে পেটাতে থাকে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মোফাজ্জল হক নাসিম বস্তা থেকে ধারালো অস্ত্র বের করে। পরে তিনি উঠে দৌড় দিলে আসামিরা পেছন থেকে ধাওয়া করে।
আরও জানা গেছে, মামলার বাদী নূর উদ্দিনকে রিকশায় তুলে দেওয়ার পরে আসামিরা সাক্ষী রাফি খানের পথরোধ করে চারদিক থেকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে এবং সেখান থেকে ছাড়া পেতে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এরপর তার কাছে থাকা নগদ সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পরবর্তীতে হলে থাকায় বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে ৪৪ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে। এরপর গত বছরের ১৩ জুলাই চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ফাহাদ মৃধা ছাত্রদল নেতা নূর উদ্দিনকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা ও হুমকি দেয়। ফলে নিরাপত্তার জন্য তিনি মাস্টার্সে ভর্তি না হয়েই রাজশাহী ত্যাগ করেন।
হামলার দেড় বছর পর কেন মামলা করেছেন জিজ্ঞাসা করলে ছাত্রদল নেতা শেখ নূর উদ্দিন বলেন, হামলার শিকার হয়ে ওইদিনই থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। তবে তখন প্রশাসন আমার মামলা নেয়নি। পরে আমি প্রক্টর অফিসেও বিষয়টি জানাই। তারা এ বিষয়ে দায়সারা উত্তর দিয়েছে। যেহেতু আমার কাছে সকল প্রমাণ আছে, তাই আইনিপ্রক্রিয়ায় আমার ওপর হামলার বিচারের জন্য মামলা করেছি।
মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক কালবেলাকে বলেন, মামলাটি সোমবার দুপুরে রুজু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা এ বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। শিগগির আমরা অভিযান পরিচালনা শুরু করব।
মন্তব্য করুন