সিগারেট কোম্পানিগুলোর ওপর উচ্চহারে কর আরোপের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে যুবসমাজকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সংগঠনটির সভাপতি সাদুর রহমান নবীন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিরোধিতার সঙ্গে সঙ্গে সিগারেট কোম্পানিগুলো ই-সিগারেট, ভেপিং নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে জোর প্রচারণা চালাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে নেশাসক্ত করতে ই-সিগারেট, ভেপিং এগুলো একধরনের অস্ত্র। দেশের শিশু-কিশোর তরুণদের ধূমপানে আকৃষ্ট করতে তামাক কোম্পানি রেস্টুরেন্টে তৈরি করছে ধূমপানের স্থান। ভেপিং বা ই-সিগারেট (বাংলাদেশে এখনো সেভাবে যার ব্যবহার নেই) ব্যবহারের জন্য তৈরি করেছে ভেপিং মেলা। সিগারেট কোম্পানি ব্যবসার জন্য অর্থনীতির নামে হাজার কিশোর তরুণদের স্বাস্থ্য ধ্বংসের খেলায় লিপ্ত। বাংলাদের প্রায় ৪৯% জনগোষ্ঠী তরুণ। শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের রক্ষায় এখনই আইনি বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে ই-সিগারেট আমদানি, রপ্তানি, পরিবহন, বিক্রয়, বিতরণ, সংরক্ষণ এবং বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা উচিত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তামাক কোম্পানিগুলো প্রচার করছে আইন প্রণয়ন বা শক্তিশালী করা হলে সরকারের রাজস্ব কমে যায়। প্রকৃতপক্ষে, ২০০৫ সালে বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন এবং ২০১৩ সালে আইন সংশোধন হবার পর এ সময়কালে তামাক হতে রাজস্ব প্রায় ১১গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তামাকের ব্যবহারও কমে এসেছে।
সুতরাং এটি প্রমাণিত, আইন প্রণয়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার কমে কিন্তু সরকারের রাজস্ব কোনোভাবেই কমাবে না। বরং সিগারেট কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন কৌশলে রাজস্ব ফাঁকির কারণে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুসারে- তারা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে সিগারেট বিক্রি না করে ফাঁকি দিচ্ছে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা রাজস্ব।
এ ছাড়াও দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ। অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। সিগারেট সেবনের কারণে দেশে প্রতিবছর অকালে প্রাণ হারায় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মানুষ। এ অবস্থায় নতুন বাংলাদেশে গড়ার যাত্রায় জনস্বাস্থ্য রক্ষায় চেষ্টাকে অব্যহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। চিকিৎসক ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে সিগারেট কোম্পানিগুলোর উপর উচ্চহারে কর আরোপের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে যুব সমাজকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
মন্তব্য করুন