ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে রাজধানীর নীলক্ষেত থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে ৩০ হাজার টাকা আদায়ের করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) আনুমানিক বিকাল ৫টার দিকে তাকে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে অর্থ আদায় করে তারা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আশিকুজ্জামান বাপ্পি। তিনি ঢাকা কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসের ২০৪ নম্বর রুমে থাকেন।
বাপ্পির সহপাঠীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স কলেজের সামনে থেকে ৩/৪ জন তার নাম জিজ্ঞাসা করে। পরে সাদা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার বোনের কাছ থেকে ডিবি পরিচয় দিয়ে ২০ হাজার টাকা আদায় করে। তার বন্ধুদের কাছ থেকেও ১০ হাজার টাকা নিয়ে আশুলিয়ার দিকে ছেড়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বাপ্পিকে আশুলিয়ায় ছেড়ে দিলে সোহেল নামে এক পথচারীর কাছে সাহায্য চান। এ সময় সোহেলের ফোন দিয়ে বাপ্পি তার পরিবার ও বন্ধুদের ঘটনাটি জানায় সে।
সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাপ্পির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। হঠাৎ আশুলিয়ায় তার সঙ্গে দেখা হলে আমাকে বলে খুব বিপদে পড়েছি, একটু সহযোগিতা করেন। তখন আমার ফোন দিয়ে তার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জানতে পেরেছি, বাপ্পিকে নীলক্ষেত থেকে ধরে কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে মুক্তিপণ চান দুর্বৃত্তরা। টাকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাপ্পির ভগ্নিপতি রিপন বলেন, হঠাৎ রাতে বাপ্পির ফোন থেকে ডিবি পরিচয় দিয়ে ৫০ হাজার টাকার মুক্তিপণ চান এবং টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে। আমার স্ত্রীর ফোনে ২০ হাজার টাকা ছিল, সঙ্গে সঙ্গে তা দিয়ে দেই। পরে আরও টাকা চাইলে সে রাজি হলেও আমি নিষেধ করি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান বাপ্পি কালবেলাকে বলেন, আমি লালবাগ টিউশন থেকে কলেজে আসার সময় বিকাল ৫টার পর ‘গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স’-এর সামনে এক লোক নাম-ঠিকানা জানতে চায়। আমি বলার পর তারা আমাকে গাড়িতে উঠতে বলে। রাজি না হলে জোর করে গাড়িতে তোলে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এটা আমি জানতাম না। এরপর আমাকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে। কখনো এক লাখ আবার কখনও ৫০ হাজার টাকা চায়। পরে আমার ফোন দিয়ে আপুকে টাকার কথা বললে ২০ হাজার পাঠায়। তারা জোর করে আমার ফোনের বিকাশ পিন নিয়ে অন্য জায়গা থেকে টাকা তুলে আনে।
তিনি আরও বলেন, সাভারের একটি রুমে আমাকে আটকে রাখে। সেখান থেকে চোখ বেঁধে আবার অন্য জায়গায় নিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। কলেজে ফিরে আসার জন্য ৫০০ টাকা দেয় তারা। আমি গাড়ির নম্বর দেখার চেষ্টা করলে শেষ দুটি সংখ্যা (২৪) দেখতে পাই। আর আমার কাছে থাকা মানিব্যাগ থেকে টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় তারা।
নিউ মার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফিরোজ আহমেদ কালবেলাকে বলেন, থানায় একটি জিডি করেছে বাপ্পির ক্যাম্পাসের বড় ভাই ও বন্ধুরা। ঘটনাটি আমরা শুনেছি এবং জানতে পেরেছি যে তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। আজকে সকাল থেকে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন