ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংস্কার বিষয়ে ‘বিজ্ঞান শিক্ষার্থী-শিক্ষকের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসমাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সংগীতা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসমাজের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. মনজুরুল করিম স্বাগত বক্তব্য দেন। জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুস্তাক ইবনে আয়ূব এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নাদরা তাবাসসুম যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবির এবং পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া মামুন আলোচনায় অংশ নেন। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
মতবিনিময় সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ধারাকে গতিশীল করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মপরিকল্পনা সংস্কারের উপর আলোকপাত করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রদানের পাশাপাশি ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ, রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ, জবাবদিহিতা ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, একাডেমিক অবকাঠামো বর্ধিতকরণ, বৈজ্ঞানিক অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সম্পদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার, আবাসন সংকট নিরসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি, শিক্ষক নিয়োগ এবং পদোন্নতি ব্যবস্থার সংস্কার, শিল্প-বিশ্ববিদ্যালয় সংযোগ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, রিসার্চ ম্যানেজমেন্ট উইং চালু, সরকারি প্রকল্পে অংশগ্রহণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রেনিং ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়ন, ক্যান্টিনে খাবারের মান উন্নয়ন ও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা, গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি, ইন্টার্নশিপ ও শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম চালু, শিক্ষক মূল্যায়ন এবং ডিজিটালাইজেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের উপর সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ সমন্বিত একটি প্ল্যাটফর্মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা, সুবিধা, সংকট এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ তৈরির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসমাজকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
পঠন, পাঠন এবং গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেধা আর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। রাষ্ট্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ও কর্মপন্থা ঠিক করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দেশ ও সমাজের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের ধারাবাহিক এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মন্তব্য করুন