কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলার আবেদন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই আবেদনে ছাত্রলীগের ২২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় এই মামলা দায়ের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আরমান হোসেন।
এর আগে একই ঘটনায় ২১ অক্টোবর শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা মাহিন সরকার। সেখানে ৩৯১ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ৮০০ থেকে এক হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার বিষয়ে সন্ধ্যায় শাহবাগ থানা চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে প্লাটফর্মের নেতা আবদুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ২১ অক্টোবরের মামলায় যাদের নাম বাদ পড়েছিল এবং যারা মূল হোতা ও উসকানিদাতা, তাদের অন্তর্ভুক্ত ও সমন্বয় করে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আরমান হোসেন।
পরে মামলার বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন আরমান হোসেন বলেন, গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও এদের অন্য অঙ্গসংগঠনের নির্মম হামলা, আঘাত ও অত্যাচার আমরা সবাই প্রত্যক্ষ করেছি। সেই ঘটনায় আমাদের আগের মামলায় কিছু আসামি বাদ পড়ে যায়। হামলার কিছু মূল হোতা সেই মামলায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি বাদী হয়ে ১৫ জুলাইয়ের হামলায় যারা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে, সরাসরি মদদ দিয়েছে এবং যারা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের অবৈধভাবে বাধা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি।
তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ৩২৬, ১০৯ ও ১১৪ নম্বর ধারায় এই মামলা করা হয়েছে। হামলার মূলহোতা ও সহায়তাকারীদের পাশাপাশি ছাত্রীদের হলগুলোতে ছাত্রলীগের পদধারী যেসব নেত্রী অবৈধভাবে আন্দোলনকারী ছাত্রীদের বাধা দিয়েছে, দণ্ডবিধির ৩৪১ নম্বর ধারায় তারাও আসামি হয়েছে। মামলার ১৯৮ থেকে ২২০ নম্বর আসামি হয়েছেন ওই নেত্রীরা।
আরমান বলেন, হামলাকারী আসামিদের চিহ্নিত করতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। আমাদের হোমওয়ার্ক, এক সপ্তাহ ধরে আমাদের নিজস্ব পর্যালোচনা, তালিকা প্রণয়ন এবং নিজস্ব নিরীক্ষার ভিত্তিতে আমরা আসামিদের চিহ্নিত করেছি। এই মামলায় অপরাধের নতুন ধারা সংযোজন হয়েছে। এটা একটা স্বতন্ত্র মামলা। আমরা আশা করি, যেখানেই আওয়ামী সন্ত্রাসী ও তাদের দোসররা বিভিন্নভাবে জনসাধারণকে গত ১৫ বছরে অত্যাচার, নির্যাতন ও হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সবাই আইনি ব্যবস্থা নিতে এগিয়ে আসবেন।
মন্তব্য করুন