অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে ঢাকা কলেজে আনন্দ মিছিল, গরু ও ছাগল জবাই করে ভোজের আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) কলেজের দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাসে এ ভোজের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, মাথাপিছু ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলে ৯৫ হাজার টাকার গরু এবং ১২ হাজার টাকা দিয়ে ছাগল কিনে আনেন শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নেন কলেজের আবাসিক-অনাবাসিক ১ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।
এ দিন সকাল থেকে ঢাকা কলেজের হলপাড়ায় গরু ও ছাগল নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি এরপর বিকেলে গরু-ছাগল জবাই করে দক্ষিণায়ন হলে রান্নার আয়োজন করেন। গরুর নাম রাখা হয় জসিম-জনি ও ছাগলের নাম রাখা হয় সোহেল।
ঢাকা কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বাদশা কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ঢাকা কলেজে এমন কেনো অনুষ্ঠান হয়নি। কেননা ছাত্রলীগ হলগুলোতে সব সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাত। তাদের ভয়ে কেউ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারত না। তারা সিটবাণিজ্য থেকে শুরু করে, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক নির্যাতনসহ নানা অপকর্ম করত হলগুলোতে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পতনের পর ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যায় ছাত্রলীগের গুণ্ডা বাহিনী। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় আনন্দে মেতেছে শিক্ষার্থীরা।
অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন রাকিব কালবেলাকে বলেন, ছাত্রলীগের মতো বৃহত্তর একটা সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার পেছনে শত শত কারণ রয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছরের ইতিহাসে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তাদের দ্বারা সংঘটিত হয়নি। ছাত্রলীগ একটি ছাত্র সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি দমন করার জন্য সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে।
গরুর নাম জসিম-জনি ও ছাগলের নাম সোহেল রাখার বিষয়ে আরেক শিক্ষার্থী কালবেলাকে বলেন, ঢাকা কলেজে আদু ভাই হিসেবে জসিম, জনি ও সোহেলকে সবাই চিনত। জসিম নর্থ হল, জনি আন্তর্জাতিক ও সোহেল ফরহাদ হলে ১৪ থেকে ১৫ বছর ছিল। তাদের ছাত্রত্ব না থাকলেও কলেজে সিট দখল করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নানা অত্যাচার-নির্যাতন করত। হলে গেস্টরুমে রাতভর সাংবাদিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে সোহেল। এ ছাড়া ইভটিজিং, চাঁদাবাজি, চুরিসহ নানা অভিযোগ থাকার কারণেই তারা কলেজে সেলিব্রেটি বনে যেত। এ জন্যই তাদের নামানুসারে গরু-ছাগলের নামকরণ করা হয়।
মন্তব্য করুন