পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল তিনটায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১৬ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক হামলায় সরাসরি নেতৃত্বদানকারী কয়েকজনের নাম দেখে ছাত্র-প্রতিনিধিরা বিক্ষুব্ধ হয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করেন। সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের ৬১ জেলায় জেলা পরিষদ বিলুপ্ত হলেও তিন পার্বত্য জেলায় এখনও জেলা পরিষদ বিলুপ্ত হয়নি এবং তিন পার্বত্য জেলা ব্যাতীত বাংলাদেশের সকল জায়গায় প্রশাসনে রদবদল হলেও তিন পার্বত্য জেলায় এখনো কোনো প্রকার রদবদল হয়নি।
সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং চাক বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে বিগত সময়ে আওয়ামী সরকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা তৈরি করে আন্তর্জাতিক ফায়দা হাসিল করেছে, বর্তমানে প্রশাসনের করাপটেড লোকজন পাহাড়কে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে।
ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাত ফরাজী সাকিব বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকারীদের বাদ দিয়ে পাহাড় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা কখনো মেনে নেওয়া হবে না এবং আওয়ামী দোসরদের যদি কোনোভাবে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করা হয় সেটা কঠোর হস্তে প্রতিহত করা হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সংগঠক লোকমান হোসেন, বলেন পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
এ সময় তিনি আলী ইমাম মজুমদারের বিরুদ্ধে পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়োগ কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক রুদ্র মুহম্মদ জিয়াদ বলেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে না পারার কারণ কি তা স্পষ্ট করতে হবে, অন্যথায় উপদেষ্টা মহোদয়কে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পার্বত্য জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি ইরফানোর রহমান, অপূর্ব ফ্রাইং অপু ত্রিপুরা, পাইশিখই মার্মা প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে ছাত্র-নাগরিকদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি পেশ করেন মোহাম্মদ এরফানুল হক। দাবিগুলো হলো - বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে পরিষদ গঠনের এহেন দুরভিসন্ধি বাদ দিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনএবং জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনায় বসতে হবে; জুলাই বিপ্লবের আদর্শে উজ্জীবিত ছাত্র নাগরিকদের সমন্বয়ে জেলা পরিষদ গঠন করতে হবে; এই ক্ষেত্রে প্রতিটি জেলা পরিষদে অন্তত তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সকল প্রতিষ্ঠান থেকে অতিসত্বর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন