ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে নারী প্রতিকৃতির মাথায় দুর্বৃত্তদের ‘হিজাব’ পরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কমিটির ব্যাপারে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০ অক্টোবর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু চত্বরে নারী ভাস্কর্যের মুখে কালো কাপড় পরানো অবস্থায় দেখা যায়। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির কার্যপরিধি সম্পর্কে জানিয়ে বলা হয়, এই কমিটির কার্য পরিধি হলো- ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করা, এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ প্রদান করা এবং সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ মাহবুব কায়সার, ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ড. এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী এবং ড. সান্টু বড়ুয়া।
এর আগে গত রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে কয়েকজন যুবক মাস্ক পরে মোটরবাইকে করে এসে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতির মাথায় এই হিজাব পরিয়ে দ্রুত চলে যায়। পরে রাত দেড়টার দিকে হিজাব বা কাপড়টি সরিয়ে ফেলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও তারিকুল ইসলামসহ কয়েকজন।
এ বিষয়ে তারিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বিপ্লবী ছাত্রজনতাকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলো চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। রাজু ভাস্কর্যে কালো কাপড় পরিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিলো। তাৎক্ষণিকভাবে সেই কালো কাপড় সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এগুলো মূলত বিপ্লবী ছাত্রজনতার ঐকবদ্ধ শক্তিকে বিভাজিত করার কর্মযজ্ঞ। দেড় হাজার শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানকে আমরা কোনোভাবেই নস্যাৎ হতে দিতে পারি না। ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলোর চক্রান্তকে রুখে দেওয়ার দায়িত্ব আপনার, আমার, সবার। তাই সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ কালবেলাকে বলেন, ঘটনার পরপরই আমাদের টিম সেখানে গিয়েছে। কারা এই কাজ করেছে সেটা জানার জন্য অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছে তারা। জড়িতদের বের করার জন্য আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তকরণের কাজ করবেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে হবে।
সাইফুদ্দীন আহমদ আরও বলেন, আমার মনে হয়, বিতর্ক সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য একটা গ্রুপ এসমস্ত কাজ করছে। তাদের এই চক্রান্ত সফল হবে না।
মন্তব্য করুন