ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
নতুন প্রশাসনের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শুরু থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, আবাসন সংকট নিরসণ, বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডসমূহ হলো : ১. ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেক আবাসিক হলে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা এবং অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা প্রদান।
২. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেমোক্রেসি ল্যাব প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য ইউএসএইড এবং আইএফইএস প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইউএসএইড এবং আইএফইএস প্রতিনিধিরা উপাচার্যকে এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দূষণমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলা ও পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পলিথিন ও এসইউপি বর্জন এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক আলোচনাসভা এবং চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রকৃতি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
৪. ছাত্রীদের জন্য একটি হল নির্মাণ, ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ, বৃত্তি তহবিল গঠন, মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক, ইউজিসি এবং এডিবি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিগণ উপাচার্যকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
৫. যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধিগণ উপাচার্যকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
৬. আন্তর্জাতিক র্যাংকিং-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সম্মানজনক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গবেষণা কার্যক্রমে উৎকর্ষ সাধন, ডাটা সংগ্রহ, ওয়েবসাইটে গবেষণা ডকুমেন্টেশন সংরক্ষণসহ বিভিন্ন কাজে গতিশীলতা আনতে বিভাগ ও ইনস্টিটিউট পর্যায়ে কমিটি গঠন এবং এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান নিজ নিজ অবস্থান থেকে ডকুমেন্টেশন আকারে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
৭. নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের ৬টি প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানোসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
৮. ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউরোপ-বাংলাদেশ ফেডারেশন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইবিএফসিআই প্রতিনিধিদল উপাচার্যকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে বিশেষ তহবিল গঠন এবং ইউরোপের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
মন্তব্য করুন