রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অপসারণের দাবিতে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিভাগে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বোরকাকে পতিতাবৃত্তির সঙ্গে তুলনা ও খোলামেলা পোশাকের দোহাই দিয়ে অশোভন মন্তব্য করতেন। বিভাগের উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ফেসবুকে পোস্ট এবং এর বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য শিক্ষার্থীদের নগদ অর্থের প্রলোভন দেখিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ফল বিপর্যয় ও পাঠদানে ফাঁকি দেওয়া ও সেশনজট সৃষ্টির অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী নওশিন ইসলাম বলেন, বিভাগের সেশনজট ও অর্থ কেলেঙ্কারির জন্য অধ্যাপক মামুন স্যার দায়ী। বিভিন্ন সময় তিনি নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে হেনস্তা করতেন। বোরকা পরাকে তিনি পতিতাবৃত্তির সঙ্গেও তুলনা করেছেন। এমন একজন শিক্ষককে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কোনো শিক্ষার্থীই চায় না। আমরা তার অপসারণ চেয়ে উপাচার্য বরাবর একটা আবেদনপত্র দিয়েছি। তাকে আমাদের বিভাগ থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
পোশাক নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের প্রথম বর্ষের ক্লাসেই তিনি একদিন আমাকে বলেন, তুমি তো কালো বোরকা পরেছ, এটায় তো আলো-বাতাস ঢুকবে না। তোমার সন্তান তো প্রতিবন্ধী হবে। তিনি ক্লাসের সবার সামনে একথা বলেন। যার ফলে বেশকিছুদিন আমি মানসিকভাবে অস্বস্তিতে ছিলাম।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আমরা একটা জরুরি একাডেমিক কমিটির সভা ডাকি। পরে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করি যে বিভাগের স্বার্থে, শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যেটা করলে শিক্ষার্থীদের মঙ্গল হয় সেটা যেন করা হয়। এখনো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ বিষয়ে জানতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের অপসারণ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একদিনের মধ্যে তাকে অপসারণ না করা হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মন্তব্য করুন