বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সনাতনী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মহালয়া উপলক্ষে প্রথমবারের মতো দেবী আগমনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২ অক্টোবর) মহালয়ার মধ্যে দিয়ে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানটি ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কাবেরী মজুমদার ও সনাতনী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
দেবী আগমনী-২০২৪ অনুষ্ঠানটির সূচনা হয় ভোর ৫টায় শ্রী শ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে। এরপর ভোর ৬টা থেকে শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় সংগীতানুষ্ঠান ও নাটক পরিবেশন করে। পরে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে হরিনাম সংকীর্তন শুরু হয় এবং সবশেষে প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কাবেরী মজুমদার বলেন, সনাতনী ছাত্রদের দ্বারা প্রথমবারের মতো দেবী আগমনীর আয়োজন আমাকে বিমোহিত ও গর্বিত করেছে। তাদের এ ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবতার বন্ধন চিরজাগ্রত করুক। বিশ্ব দরবারে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াক- মায়ের শ্রী চরণে আমার এই প্রার্থনা। আমার শিক্ষার্থীদের ও সমগ্র সনাতনীদের মঙ্গলের জন্য মা প্রতি বছর পৃথিবীতে আসেন। মা এবারও এসেছেন। আমাদের সব ভক্তি-শ্রদ্ধা উজাড় করে যেন মা তোমাকে বরণ করে নিতে পারি, তুমি আমাদের শক্তিদায়িনী মা ও আমাদের রক্ষা কর- এই প্রার্থনা করি। আমার শিক্ষার্থীদের মঙ্গল হোক এবং তাদের শুভকামনা করছি।
ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জয় পাল জানান, মহালয়া হলো মাতৃপক্ষের শুভ সূচনা। হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার আগমনী মঙ্গলবার্তা নিয়ে আসে এ দিন।
বুটেক্স ক্যাম্পাসে এই ১ম মহালয়া উদযাপন একটি অনন্য দৃষ্টান্তের সূচনা। আশা করি প্রতি বছর এই অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা কামনা করছি।
ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আকাশ সাহা বলেন, ছোটবেলায় ভোরবেলা উঠে মহালয়া দেখা এখন স্মৃতি হয়ে গেছে। আমাদের এই স্মৃতি পুনরায় জাগ্রত করার এক বিশাল সুযোগ গেল আজকে। নানা ব্যস্ততার মাঝে মহালয়া উপলক্ষে বাড়ি যাওয়া হয় না অনেক বছর। এমন কী ভোরে উঠে মহালয়া শোনা বা দেখাও হয় না। আজকের এই আয়োজন আমাকে ছোটবেলাতে নিয়ে গেছে। দেবীর আগমনে সবার মাঝে সুখ, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি আসুক। আশা করি সামনের সময়ে আরও বিশাল পরিসরে দেবীর আগমনে মহালয়া আমরা ক্যাম্পাসে পালন করতে পারব।
উল্লেখ্য, পুরান অনুযায়ী মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা ব্রহ্মার কাছ থেকে মহিষাসুরকে বধ করার দায়িত্ব পান। মহিষাসুরকে পরাজিত করার জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর যে মহামায়ারূপী নারী শক্তি তৈরি করেন তিনিই দশভূজা দেবী দুর্গা। তিনি টানা ৯ দিন যুদ্ধ করে মহিষাসুরকে বধ করেন।
মন্তব্য করুন