‘বঙ্গবন্ধু’ বাংলার বন্ধু হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে দেওয়া একটি উপাধি। তিনি একজন খ্যাতিমান বাঙালি জাতীয়তাবাদী এবং একজন মহান রাজনীতিবিদ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সেন্টর ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার ভরদ্বাজ।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা ২০২২’ এ অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিল ভারত
বক্তৃতার শিরোনাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : এ লিডার অব ফ্রিডম অ্যান্ড ইম্যানসিপেশন’।
এসময় অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার ভরদ্বাজ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু’ বাংলার বন্ধু হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে দেওয়া একটি উপাধি। তিনি একজন খ্যাতিমান বাঙালি জাতীয়তাবাদী এবং একজন মহান রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশে জাতির পিতা হিসেবেও স্বীকৃত। তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত নেতাদের একজন হিসেবে দেখা হয়। ব্যতিক্রমী নেতৃত্বের ক্ষমতা তাকে দেশের একজন অবিসংবাদিত নেতা করে তোলে। তার দূরদৃষ্টি ও যোগ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশ সৃষ্টির পথ তৈরি করেছিল। দেশের মানুষের প্রতি তার কালজয়ী এবং অবিচল বিশ্বাস এখনও নতুন প্রজন্মের মধ্যে অনুরণিত হয়।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান রাতারাতি বঙ্গবন্ধু হননি। নিজের জীবনের পরোয়া না করেই তিনি বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ‘জাতির জনক’ হিসেবে তিনি শুধু দেশের আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করেননি বরং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জনগণের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ বন্ধন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তার লক্ষ্য ছিল শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো নির্মূল করা। তিনি ছিলেন সবার স্বাধীনতা ও মর্যাদার পক্ষে। নির্যাতিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার নিয়ে তিনি ছিলেন সাহসী ও সোচ্চার। তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক যার মধ্যে ছিল সমতা, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে, বাঙালি পরিচয়ের ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদের ধারণা। তিনি শুধু অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির জন্যই কাজ করেননি, বাঙালির গর্ব ও মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার জন্যও কাজ করেছেন। তিনি ক্ষমতার ভিত্তি হিসেবে জনগণকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করতেন। তাই তিনি জনগণের শক্তিকে একত্র করে নিজের দলকে গণপ্রতিনিধিত্বকারী ও জনমানুষের সংগঠনের হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার ট্রাস্ট ফান্ডের আয়োজনে এ বক্তৃতা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্ট ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। ট্রাস্ট ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক ও সোসাইটির সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে সোসাইটির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হারুন উর রশিদ আসকারী, অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত মসউদ মান্নান, সাবেক সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, ড. জালাল ফিরোজ, অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী, অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার, সোসাইটি কাউন্সিল সদস্য, সোসাইটির সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন