কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
অধিভুক্ত সাত কলেজ

‘স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’ এর দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

‘স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি। ছবি : কালবেলা
‘স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি। ছবি : কালবেলা

‘স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তারা চার দফা দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টাকে এই স্মারকলিপি দেন।

তাদের দাবিগুলো হলো- অনধিক ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সাত কলেজের সংকট নিরসনে একটি সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। সংস্কার কমিশন ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে শুধু সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবে; সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আলোকে সরকার সাত কলেজকে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেবে ও তা বাস্তবায়ন করবে এবং সংস্কার কমিশন ঢাবি প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে, যাতে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের ভোগান্তি না হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে অন্যান্য খাতের ন্যায় শিক্ষাখাত চরম অব্যবস্থাপনা ও বৈষম্যের মধ্য দিয়ে গেছে। এমন অব্যবস্থাপনা আর বৈষম্যের থেকে বাদ যায়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজও। আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিনের চলা অব্যবস্থাপনার বড় ভুক্তভোগী। আমরা আশা করছি, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কলেজগুলোর সমস্যা সমাধানে ও দাবি বাস্তবায়নে দ্রুতই একটি বিশেষ কমিশন গঠন করবেন।

এতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত। যে লক্ষ্য আর উদ্দেশ্যের কথা বলে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, সেটা বিগত ৮ বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বিপরীতে এসব কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে নেমে এসেছে চরম বিশৃঙ্খলা। এক কথায় শিক্ষার মানের উন্নতির পরিবর্তে বৈষম্যমূলক বিভিন্ন নীতি ও প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার যথাযথ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিনের অধিভুক্তির পরও যেখানে ঢাবির অধীনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার মানের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি, সেখানে এমন অধিভুক্তি ধরে রাখা অর্থহীন।

অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সাত কলেজের অধিভুক্তির বিপক্ষে। এখন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেরাও অধিভুক্তি বাতিলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন।

ঢাবির অধীনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের যেসব সমস্যাগুলো বড় আকারে দেখা দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়ের অভাব। এ ছাড়া বিভাগভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, গবেষণার সুযোগের অপ্রতুলতা, অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারের অনুপস্থিতি, শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকট, আবাসন সমস্যা, পরিবহণ সংকট, ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, অ্যাকাডেমিক সিলেবাস অসম্পূর্ণ থাকাসহ পরীক্ষা মূল্যায়ণে গণহারে ফেল করিয়ে দেওয়া- এসব সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে সমাধানহীনভাবে চলছে। ফলস্বরূপ, সাত কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা নিজেদের অধিকার আদায়ে বারবার রাজপথে আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সাত কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে বারবার একে অপরের দিকে দায়িত্ব ঠেলে দিয়ে এসব সমস্যা জিইয়ে রেখেছেন।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সাত কলেজের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রত্যয় নিয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করে রাজধানীর এ সাতটি কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাই।

ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, উপদেষ্টা সাত কলেজের বঞ্চনা সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত। তিনি সাত কলেজের এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে কয়েকটি উদাহরণ দিয়েছেন। সাত কলেজের অভূতপূর্ব উন্নয়নে কি কি বাঁধা আসতে পারে এমন কিছু বিষয় উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের নিকট জানতে চেয়েছেন। যেহেতু ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠানগুলো অবস্থিত তা-ই সুপরিকল্পিত উপায়ে তিনি গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানিয়েছেন। রাজপথে না গিয়ে পরিকল্পিত উপায়ে দাবি তুলে ধরায় তিনি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদেরও প্রশংসা করেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাহরাইনে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি নিহত

সাবেক এমপি এনামুলকে কারাগারে ব্যাপক মারধর

সিজিআই ইভেন্টে বিতর্কিত ব্যক্তিকে নিয়ে মাহফুজ আলমের স্ট্যাটাস

‘জনগণের চাহিদা পূরণ না করে ভারতে ইলিশ পাঠানো অন্যায়’

যবিপ্রবির উপাচার্য হিসেবে যোগ দিলেন ড. আব্দুল মজিদ

ডিএমপির ঊর্ধ্বতন ১০ কর্মকর্তাকে বদলি 

কক্সবাজারে ৫৩০ বস্তা পলিথিন জব্দ

১২ সপ্তাহের আল্টিমেটাম / প্রি-পেইড মিটার বাতিলের দাবিতে বিদ্যুৎ অফিসে গ্রাহকদের বিক্ষোভ

ছাত্র-জনতার ঐক্য নষ্ট করার জন্য একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে : আবু হানিফ 

বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত 

১০

ঐক্যবদ্ধভাবে গণমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত রাখব : নাহিদ ইসলাম

১১

আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক / এস আলম এবং কেডিএস ঘনিষ্ঠ দু’জনকে অতিরিক্ত এমডি পদে নিয়োগের আয়োজন

১২

গৃহবধূর ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় পুলিশ কর্মকর্তা ধরা

১৩

‘জামায়াতের কর্মীরা জীবন দিতে জানে, পালাতে জানে না’

১৪

জাপান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়োজনে সহায়তা দিতে প্রস্তুত : রাষ্ট্রদূত 

১৫

‘জন্মের পর রাস্তায় মাটি দিতে দেখিনি, মেরামত-সংস্কার তো দূরের কথা’

১৬

ববি ছাত্রলীগের এক নেতার থেকেই সাড়ে ৪ লাখ টাকা পান স্থানীয়রা

১৭

প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতে সাবেক এমপি মমিন মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

১৮

এমপি আনার ‘হত্যা রহস্য’ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের বই

১৯

জানা গেল জবিতে সশরীরে ক্লাস শুরুর তারিখ

২০
X