বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক। এরমধ্যে দুজন শিক্ষক টানা দুবার এই তালিকায় এসেছেন।
তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. শেখ জামাল উদ্দিন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. অনুপম কুমার বৈরাগী। অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শেখ জামাল উদ্দিন টানা দুবার এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং উদ্ভাবনে ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য এই অসাধারণ সম্মান পেয়েছেন তারা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষকের নাম সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এলসেভিয়ের তালিকায় প্রকাশিত হয়। গবেষকরা বিশ্বব্যাপী সমস্ত বিজ্ঞানীদের প্রায় ২ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করেন।
ড. নজরুল ইসলাম বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি সাস্টেইনেবল এনার্জি রিভিউ, কার্বোহাইড্রেট পলিমারস, উড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, জার্নাল অব উড সায়েন্স, উড অ্যান্ড ফাইবার সায়েন্স, বায়োরিসোর্সেস, পলিমেরি, ফরেস্ট প্রোডাক্ট জার্নালের মতো নামি জার্নালে ৯১টি পিয়ার-রিভিউ করা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন।
এ ছাড়া তিনি বহুজাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তার গবেষণা উপস্থাপন করেছেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, সুন্দরবন ও উদ্যোক্তা বিষয়ে চলমান তিনটি প্রকল্পে কাজ করছেন। তিনি উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ক্রাফট কাগজ উৎপাদন, সুন্দরবন, বনজ সম্পদসহ নানান সেক্টরে ২৫টি প্রজেক্ট সম্পন্ন করেছেন। তিনি কাঠ বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক নিয়ে ১৭টি বইয়ের অধ্যায়ও প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে তালিকায় স্থান পাওয়া আরেক শিক্ষক ড. শেখ জামাল উদ্দিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি ৯০টির বেশি নামিদামি জার্নালে তার গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। তিনি মাইস মডেলে বিভিন্ন ঔষধি উদ্ভিদের নির্যাসের থেরাপিউটিক সম্ভাবনার মূল্যায়ন করার জন্য বেশ কয়েকটি ফার্মাকোলজিকাল পদ্ধতি তৈরি করেছেন এবং বিভিন্ন জৈবিক বৈশিষ্ট্যসহ বেশ কয়েকটি বায়ো-অ্যাকটিভ নভেল কম্পাউন্ড আবিষ্কার করেছেন। এথনোফার্মাকোলজি এবং প্রাকৃতিক উৎস থেকে ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে তার ১৭ বছরেরও বেশি গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এ ছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, জর্ডান, ব্রাজিল, পাকিস্তান, পোল্যান্ড, চীনসহ বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং নিয়মিত জাতীয়-আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও সিম্পোজিয়ায় তার গবেষণা উপস্থাপন করতে যোগ দেন।
ড. অনুপম কুমার বৈরাগী বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার গবেষণার মধ্যে রয়েছে ফাইভ জি, গেম থিওরি, হেলথ ইনফরমেটিক্স, আইআইওটি, এগ্রি ইনফরমেটিক্স ইত্যাদিতে ওয়্যারলেস রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট। গবেষণা এবং একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব অবদানের জন্য তিনি ২০২৩ সালে ভাইস চ্যান্সেলর পুরস্কার লাভ করেন। তিনি আইইইই-এর একজন সিনিয়র সদস্য।
মন্তব্য করুন