কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলায় অভিযান পরিচালনাকালে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনা অফিসার তানজীম সরোয়ার নির্জন হত্যার প্রতিবাদ ও সম্প্রতি পাহাড় সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধন আয়োজন করেন একদল শিক্ষার্থী।
এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসীরা সেনা মারে, প্রশাসন কী করে’; ‘বাঁচাও সেনা বাঁচাও দেশ, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ’; ‘সন্ত্রাসের আস্তানা ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন বলেন, গতকাল কক্সবাজারের চকোরিয়াতে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে এক সেনাসদস্যকে হত্যা করে। একজন আর্মড সদস্যের অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও কীভাবে মেরে ফেলা হলো, এর সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যরা এত সাহস কীভাবে পায়, এর ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে। সে সঙ্গে পাহাড়ে যতগুলো হত্যা করা হয়েছে সেগুলোর সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা পাহাড়ি সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে।
হাসান ইনাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সেনাবাহিনী হত্যা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। এর আগে দেখেছি ফ্যাসিস্ট সরকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নাটক সাজিয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীদের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। আমি সেনাবাহিনীপ্রধানকে উদ্দেশ করে বলতে চাই, আপনি আপনার সেনাসদস্যের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা ৫ তারিখের আগের ঘটনা ভুলে যেতে চাই। জনগণ জানে ৫ আগস্টের আগে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল। ৫ আগস্ট দেশের সমগ্র জনতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সেটা ভুলে যেতে চাই। আপনি যদি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে না পারেন সেটাও বলে দিবেন। জনগণের বন্দোবস্ত জণগণই করবে।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা এলাকায় অভিযান চলাকালে ডাকাতের হামলায় এক সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজীম সরোয়ার নিহত হয়েছেন। নিহত তানজিম ৩৯ এসটি ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন।
আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর একটি যৌথ দল এ অভিযান পরিচালনা করে। গত মঙ্গলাবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মেজর উজ্জলের নেতৃত্বে লেফটেন্যান্ট তানজিম, দুজন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও ২৪ জন সৈনিকসহ যৌথবাহিনী একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করে। অভিযানের সময় লেফটেন্যান্ট তানজিম দুজনের মুখোমুখি হন। সে সময় একজন তানজিমের গলায় ছুরিকাঘাত করলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে চকরিয়া খ্রিস্টান হাসপাতাল ও পরে রামু সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সিএমএইচের কর্তব্যরত চিকিৎসক ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।
মন্তব্য করুন