ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামী লীগপন্থি সিন্ডিকেট সদস্যদের পদত্যাগ, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নতুন সিন্ডিকেট গঠনের দাবি এবং ফজলুল হক হলে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক এক বিবৃতিতে এই দাবি ও প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় ১৭ সদস্যের মধ্যে ১৫ জন অংশ নেন। এই সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে এখনো বহাল তবিয়তে আছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি এবং নীল দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ, নীল দলের বর্তমান আহ্বায়ক অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সভাপতি এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। এই সিন্ডিকেট শেখ হাসিনার দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।
গত ১৭ জুলাই ঢাবি সিন্ডিকেটের এই সদস্যদের মিটিংয়েই পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সোয়াট দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিন্ডিকেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। এমনকি এই সিন্ডিকেটের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা এখনো নিরাপত্তহীনতায় আছে।
সাদেকুল ইসলাম বলেন, নিয়ম না মেনে গঠিত এই সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে ব্যাপক দলীয়করণ করা হয়েছে। তাই এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নতুন সিন্ডিকেট গঠন করতে হবে। দলীয় আনুগত্যের বিবেচনায় সিন্ডিকেট গঠন করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ফজলুল হক হলে মব ভায়োলেন্সের দ্বারা হত্যাকাণ্ডের পর প্রভোস্ট এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। ৪ ঘণ্টা ধরে চলমান নৃশংসতার সময় প্রভোস্টসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী করছিলেন? সার্বিক দিক বিবেচনা করে এ কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, এ হত্যার দায় প্রভোস্টসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারে না। আমরা দাবি জানাই, ফজলুল হক হলে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে, হলের প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকদের অবিলম্বে পদত্যাগ এবং প্রক্টর, ভিসিকেও এই হত্যার দায়ভার নিতে হবে।
ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আরও বলেন, শত শত মানুষের শহীদি আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তা রূপায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও কার্যকরী ভূমিকা এবং সচেতন পদক্ষেপ নিবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি। বিরাজনীতিকীকরণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মতামত চর্চা এবং সংগঠন করার অধিকার কেড়ে নেওয়া গণঅভ্যুত্থান এবং ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থি। ফলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অগণতান্ত্রিক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
মন্তব্য করুন