ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে মোবাইল চোর সন্দেহ করে হলের কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক মারধরের পর তোফাজ্জল (৩০) নামে এক তরুণের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে আটক করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া (২৫); মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন (২১); পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মোত্তাকিন সাকিন (২১) এবং আল হোসাইন সাজ্জাদ (২২)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ফজলুল হক হলে মারধরের ঘটনায় জালাল ও সুমনকে আটক করে বিকেল ৪টায় শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়েছে। এরপর সাকিন ও সাজ্জাদকে আটক করে থানা পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ শাহবাগ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম সাহাবুদ্দিন শাহীন।
মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম- তোফাজ্জল বলে জানায়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পরবর্তীতে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যানটিনে নিয়ে খাবার খাইয়ে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম সাত সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন