ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে মোবাইল চোর সন্দেহ করে হলটির কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক মারধরের পর তোফাজ্জল নামে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। এই তদন্তের স্বার্থে প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতা চেয়েছে হল প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতদ্বারা অত্র হলের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৮/০৯/২০২৪ তারিখ রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলে সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শীদের অদ্য দুপুর ১২.০০ ঘটিকার সময় হল অফিসে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কমিটিকে সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে চোর সন্দেহে আটক করে ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা।
কয়েক দফায় মারধরের পর রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলি ইউনিয়নে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
হলটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যায় হলে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল। এমন সময় হলে হঠাৎ তোফাজ্জল নামে ওই ব্যক্তি হলে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা দুপুরে ছয়টি মোবাইল চুরির ঘটনার চোর সন্দেহে মূল ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে তাকে মারধর ও জেরা করতে থাকে। একপর্যায়ে, তাকে নিয়ে হল ক্যান্টিনে খাওয়ানো হয়। এরপর এক্সটেনশন ভবনের অতিথি কক্ষে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বুক, পিঠ, হাত ও পায়ে ব্যাপক মারধর করেন একদল শিক্ষার্থী।
এ সময় পা থেকে রক্ত বের হতে থাকে। এরপর রাত পৌনে ১০টার দিকে ফের মূল ভবনের অতিথিকক্ষে নিয়ে মারা হয়। ১০টার দিকে প্রক্টোরিয়াল মোবাইল টিমের সদস্যরা এলে মারধরকারী শিক্ষার্থীরা তফাজ্জলকে তাদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে কিছু শিক্ষার্থী ও কয়েকজন হাউস টিউটরের সহায়তায় তাকে প্রথমে শাহবাগ থানায় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন