বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অনিয়ম, জুলুম ও দুর্নীতির বিচারে বাকৃবিতে গণতদন্ত কমিশন গঠন

বাকৃবি ক্যাম্পাস। ছবি : কালবেলা
বাকৃবি ক্যাম্পাস। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে গণতদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। ওই গণতদন্ত কমিশনকে বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বাকৃবিতে সংঘঠিত সব প্রকার দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন এবং আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয় তদন্ত করে সুপারিশ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে গণতদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।

গণতদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া এবং সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার।

গণতদন্ত কমিশনে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. জি এম মুজিবর রহমান, উপদেষ্টা হিসেবে ময়মনসিংহ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. খালেদ হোসেন টিপু মনোনীত হয়েছেন।

এছাড়াও কমিশনে সদস্য হিসেবে বাকৃবি ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রামানিক, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান, পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম, ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. জোয়াদ্দার ফারুক আহমেদ, কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম হারুন-অর রশিদ, পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, সার্জারি অ্যান্ড অবসটেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঞা, পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব আলম, গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (জিটিআই) অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব, বাকৃবি প্রক্টর ড. মো. আব্দুল আলীম মনোনীত হয়েছেন।

এ ছাড়া মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিনারা খাতুন, পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুনির হেসেন, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিক-ই-রববানী, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান, কৃষি ও ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ জামান ভূঁইয়া, ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ ইকবাল, শিক্ষা বিষয়ক শাখার এডিশনাল ররেজিস্ট্রার ড. ফারুক আহমেদ, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল প্রতীক সিদ্দিক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার এডিশনাল ডাইরেক্টর মোহাম্মদ শফিউল্যাহ ও বিএসারটির এডিশনাল ডাইরেক্টর মো. ছরোয়ার হেসেনকে মনোনীত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে গণতদন্ত কমিশনের কার্যপরিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলসমূহে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর সংঘটিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, র‍্যাগিং, ইভটিজিং, গেস্ট রুম টর্চার, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও সংঘঠিত হত্যাকাণ্ডের অনুসন্ধান করে, এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে কোনো ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করে এই নির্যাতন ও হয়রানির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নতি/পর্যায়োন্নয়নে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনসহ সব প্রকার প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয় তদন্ত করা এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়াও গণতদন্ত কমিশনের কার্য পরিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজসহ সব প্রকার ক্রয় কাজে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, কমিশন গ্রহণসহ আর্থিক খাতের সকল দুর্নীতি তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং শাস্তির সুপারিশ করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শান্তির সুপারিশ করা।

বিশ্ববিদ্যালের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা নেওয়া এবং বাকি পরিশোধ না করাসহ তাদের উপর সংঘঠিত সব প্রকার জুলুম-নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে যারা নির্যাতন, হত্যা ও গণহত্যার উসকানি ও সমর্থন দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে এবং মিছিল-মিটিংসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে জনসম্মুখে প্রকাশ করার বিষয়ে বলা হয়েছে।

গণতদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া এ বিষয়ে বলেন, আমরা কমিশনের কর্ম পরিধি অনুযায়ী প্রাপ্ত অভিযোগ যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করব। কমিটির সবার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গত সাড়ে ১৫ বছরে বাকৃবির সব অনিয়ম, অপকর্ম, অপশাসন, অবক্ষয়, জুলুম ও দুর্নীতির বিচার করা হবে, যেন পরবর্তীতে কেউ এ ধরনের কাজ না করতে পারে। গত বছরের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান মর্যাদা অনেক নিচে নেমে গেছে, আমরা চাই এই বিচারের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক মানন্নোয়ন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

টাইম জোনের ধারণা এসেছে যেভাবে

সরকারের চাপে বাধ্য হয়ে ওজন কমালেন ৫৪২ কেজি

উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশে নজর জিনপিংয়ের

‘উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে আ.লীগ সরকার’

২৩ নভেম্বর: ইতিহাসের আজকের এই দিনে

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ মার্কেট বন্ধ

আজকের নামাজের সময়সূচি

প্রথম দিনে উইন্ডিজ তুলল ২৫০ রান

গাঁজা-জাল নোটসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ

১০

উইন্ডিজের প্রতিরোধ ভেঙে বাংলাদেশের স্বস্তি

১১

টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস / ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়িক অংশীদার চাই

১২

২০২৪ সালের হাইয়েস্ট কালেকশন দরদের : শাকিব 

১৩

নায়িকা পরীমনির প্রথম স্বামী নিহত

১৪

রাজনীতিতে আ.লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে হবে: নুর

১৫

নির্বাচন যত দ্রুত হবে, সমস্যা তত কমে আসবে : মির্জা ফখরুল

১৬

খাসজমির দখল নিয়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত

১৭

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ক্রীড়াঙ্গন অন্যতম একটি মাধ্যম : আমিনুল হক 

১৮

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

১৯

আহত রানার পাশে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

২০
X