সীমান্তে লাগাতার হত্যাকাণ্ড ও ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাংলাদেশকে হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘বাংলাদেশ কতকাল নিশ্চুপ থাকবে?’ ‘ফেলানী থেকে স্বর্ণা, স্বর্ণা থেকে জয়ন্ত, তারপর?’ ‘রাজনাথ সিং শাট আপ!’ ‘পাক-চীন সীমান্তে কাঁপো থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেনো শিশু মারো?’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে একাত্মতা পোষণ করে রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন বলেন, ‘গজলডোবার বাঁধ খুলে দিয়ে, সীমান্তে মানুষ হত্যা করে তারা আমাদের বন্ধুত্বের নমুনা দিচ্ছে। আমরা তাদের বন্ধু রাষ্ট্র বলে হাজার হাজার টন ইলিশ পাঠাচ্ছি বিনিময়ে তারা আবরার ফাহাদ, স্বর্ণা দাস ও জয়ন্তকে উপহার দিচ্ছে। আমরা স্পস্টভাবে জানাচ্ছি কোনো দেশের সঙ্গে ব্যাক্তিকেন্দ্রীক সম্পর্ক চাই না। প্রশাসনিক বন্ধুত্ব প্রশাসনিকভাবে চলবে।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিম রহমান বলেন, ‘দুই দেশের মাঝে সীমান্ত থাকলে সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। তবে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুলি চালিয়ে মানুষ মারা যুক্তিযুক্ত না। হত্যাকাণ্ডের পরিবর্তে তারা জরিমানা বা আদালতে শাস্তি দিতে পারত। সীমান্তে প্রবেশ নিষিদ্ধে সতর্ক করে তারা দিক নির্দেশনা না দিয়ে ধারাবাহিকভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। এ থেকে বোঝা যায় ভারত বাংলাদেশের না গত স্বৈরাচারী সরকারের বন্ধু ছিল।’
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘আজকে আমরা দেখতে পারছি আমাদের নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকদের ওপরে যেভাবে বর্ডারে হত্যাকাণ্ড চলছে, এতে এটি সুস্পষ্ট যে আমাদের সার্বভৌমত্বে এটি তাদের হস্তক্ষেপ। আমরা এটির ধিক্কার জানাই। বাংলাদেশ এখন আর সেই পর্যায়ে নেই যে আমরা চুপ করে বসে থাকব। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
প্রতিবাদ সমাবেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বর্ণার হত্যাকাণ্ডের পরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিজিবিকে বলেছিলেন পিঠ দেখাবে না। এটা পূর্ববর্তী সরকারের তুলনায় ভালো প্রতিক্রিয়া তবে মিনমিনে ও অপর্যাপ্ত মনে হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলমের উচিত ছিল ভারতকে সতর্ক করে বলা যদি আর একটি বুলেট চালানো হয় তাহলে ভারতকে ১০টি বুলেট উপহার দেওয়া হবে। বাংলাদেশের দশটি বুলেট পাওয়ার জন্য ভারতের প্রস্তুত থাকা উচিত। পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে সহাবস্থানের জন্য ক্ষতিকর যা কিছু আছে সব আজ থেকে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান করছি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাফিস আহমেদের সঞ্চালনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন