ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পাশে নির্মাণাধীন স্টাফ কোয়ার্টার ভবন থেকে ইট পড়ে তাওসিফ মাহির নামে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ কালবেলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জহুরুল হক হলসংলগ্ন নির্মাণাধীন টাওয়ারের ওপর থেকে ইট পড়ে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী মারাত্মক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তার চিকিৎসার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, তাই আমাদের পক্ষ থেকে করা হবে। কেন্দ্রীয় মসজিদে জুমার নামাজের পর তার সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়েছে। এ ছাড়া আমরা আহত ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি।
সাইফুদ্দীন আহমদ আরও বলেন, ঘটনার পরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুয়েটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতে পলাশীতে অবস্থান করা বুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের কয়েকজন সহকারী প্রক্টর তাদের দাবিসমূহ শোনেন। আজ শুক্রবার সকালেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে বুয়েট প্রশাসনের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। বৈঠকে ঘটনা খতিয়ে দেখতে সুষ্ঠু তদন্তের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। এ ঘটনায় শিগগিরই আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব। তদন্ত চলাকালে ওই ভবনের কাজ বন্ধ থাকবে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের ২০তম ব্যাচের ওই শিক্ষার্থী রাজধানীর নীলক্ষেত থেকে পলাশীর দিকে যাওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ সময় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে বুয়েটের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বলেন, তাওসিফ কয়েক মিনিট রাস্তায় পড়েছিলেন। আশপাশে থাকা মানুষ সবাই ভিডিও করায় ব্যস্ত ছিল। এমনকি পুলিশের সার্জেন্টও সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু তারাও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এরপর ঘটনাস্থল থেকে দুজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করে বুয়েটে এসে খবর দেন।
তারা বলেন, ইটের আঘাতে তাওসিফের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং মাথার খুলির হাড় ব্রেইনে ঢুকে গিয়েছে। তাওসিফ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে আছে। ডাক্তাররা বলেছেন, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার আগে তাওসিফকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
এ ঘটনায় বুয়েট শিক্ষার্থীরা কয়েক দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো, যাদের অবহেলার জন্য তাওসিফ দুর্ঘটনার শিকার তাদের জবাবদিহির আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে তাওসিফকে ক্ষতিপূরণসহ উন্নত চিকিৎসার সব খরচ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বহন করতে হবে; সব নির্মাণাধীন প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারিং সেফটি এবং জনগণের সেফটি নিশ্চিত করতে হবে। নির্মাণাধীন প্রকল্পের জন্য যেসব সেফটি কোড দেওয়া আছে সেগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সব একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, কমার্শিয়াল এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভবনে ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন