ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি গ্রুপ। টিএসসির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। দোকানিদের সঙ্গে আলোচনা না করে কেউ করছেন খাবারের দাম নির্ধারণ, কেউ করছেন দোকানের স্থান পরিবর্তন, আবার কেউ দোকান উঠিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন। কথা না শুনলে দোকান ভাঙচুরের অভিযোগও রয়েছে এদের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রবিবার টিএসসিতে গিয়ে দোকানদারদের সঙ্গে আলোচনা না করেই খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেন একটি গ্রুপ। যার প্রতিবাদে সোমবার দোকান বন্ধ রাখেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত লাইব্রেরিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে গ্রুপটি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে এ গ্রুপটি সাইফুল ইসলাম আলো, হাসান ও শরীফের নেতৃত্বে টিএসসির খাবার নির্ধারণ করেন। দোকানদারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই এ দাম নির্ধারণ করার প্রতিবাদে দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন টিএসসির দোকানিরা।
টিএসসির চা,পাউরুটি, কেক, কলাসহ অন্যান্য খাবারের দাম কমানোর দাবি শিক্ষার্থীদের। তবে সেটা আলোচনা সাপেক্ষে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুযায়ী হওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে টিএসসিতে খাবারের মূল্য তালিকা নিয়ে জবি সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মের কেউ কিছু জানত না বলে দাবি করেন একাধিক প্রতিনিধি। বিভাগীয় প্রতিনিধি নূর নবী বলেন, দোকানদারদের মূল্য বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো বিভাগীয় প্রতিনিধি অবগত নয় এবং কারও সংশ্লিষ্টতাও নেই। এখন থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একমাত্র কর্তৃপক্ষ হিসেবে নবগঠিত কমিটি কাজ করবে।
এদিকে গত তিন দিন ধরে টিএসসির দোকানের স্থান পরিবর্তন, দোকানের আকার ছোট করতেও সক্রিয় রয়েছে আরেকটি গ্রুপ। তাদের কথা না শোনায় গত শনিবার রাতে টিএসসির আরামবাগের খাবারের দোকানে ভাঙচুর চালায় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বিসহ কয়েকজন। যার সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে কালবেলা প্রতিবেদকের হাতে। এরপর হুমকি দিয়ে আসে কয়েকজন। টিএসসি থেকে আরামবাগ হোটেল উচ্ছেদ করার জন্য একের পর এক আলটিমেটাম দিয়ে যাচ্ছে কয়েকটি গ্রুপ। এ বিষয়ে আরামবাগ হোটেলের স্বত্বাধিকারী আবুল আল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, গত তিন দিন ধরে আমার দোকানে এসে কয়েকজন শিক্ষার্থী সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে হুমকি-ধামকিসহ দোকান ভাঙচুর করে গেছে। আজ সকালে টিএসসির আরেক দোকানদারও আমার মালামাল সরিয়ে নিতে বলেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বিভাগের প্রতিনিধিরা আমাকে যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই মাথা পেতে নেব। আরামবাগ হোটেলের জিনিসপত্র ভাঙচুরের বিষয়ে অভিযুক্ত রাব্বি বলেন, আরামবাগ অনেক বড় একটি জায়গা নিয়ে দোকান দিয়ে আছে। তাদেরকে বলেছিলাম দোকান ছোট করতে নাহয় বন্ধ রাখতে। কিন্তু তারা শোনে নি। তারা ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ব্যবসা করতো বলে দোকান ভাংচুর চালিয়েছি। দোকানের স্থান পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, আনোয়ার মামার দোকানে যেই খেতে যায় তাকে সে উসলায়। সবাইকে বলে আমি সামনে যাবো। আমাকে ব্যবস্থা করে দ্যান। আমাকেও বলে। এ বিষয়ে দোকানদার আনোয়ার বলেন, আমি কারো সাথে কোন ধরনের টাকার লেনদেন করি নি। আমি সকলকে বলেছি আমার দোকানটা একটু সামনে বসানোর জন্য বলেছি। এর বেশি আমি কিছু জানি না।
মন্তব্য করুন