চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আইন বিভাগে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৮ মাস পরেও ফলাফল প্রকাশ হয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন বিভাগের ৫টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে ৪র্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা এর ভুক্তভোগী। কর্তৃপক্ষ বরাবর বিষয়টি জানানো হলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ নিতে দেখা যায়নি বলে দাবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের। কিছু সংখ্যক শিক্ষকের সময়মতো পরীক্ষার খাতা জমা না দেওয়ার জন্যই ফলাফল আটকে আছে বলে দাবি তাদের।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, আইন বিভাগের স্নাতক সব ব্যাচের ( ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ বর্ষ) পরীক্ষা (মৌখিকসহ) গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। তবে ৮ মাস হয়ে গেলেও এখনো মেলেনি কোনো ব্যাচের ফলাফল। অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে জুডিশিয়ারির লিখিত দিবেন। তাদের উৎকণ্ঠা লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মৌখিক পরীক্ষায় নিজের সার্টিফিকেট বা মার্কশিট দেখাতে পারবেন কিনা এ নিয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, এই ফলাফল প্রকাশের সমস্যা কোভিডের পর থেকে তীব্র হয়েছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানকে বারংবার অবিহিত করলেও কোনো সমাধান পাইনি। এক্ষেত্রে অনেক শিক্ষকের অলসতার জন্য আমাদের ফলাফল পেতে দেরি হয়। আমরা চাই এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক। তা না হলে ক্যাম্পাস খুললে আমরা এ নিয়ে আরও জোরদার পদক্ষেপ নেব।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই সমস্যার মূল হচ্ছেন কিছুসংখ্যক শিক্ষক। ওনারা সময়মতো খাতা কেটে ফলাফল জমা দিলে এই সমস্যা হতো না। এখানে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক যিনি থাকেন অনেকসময় তার একটি সিগনেচানের জন্যেও ফলাফল আটকে থাকে৷ যেখানে আমাদের অন্য বিভাগের বন্ধুরা পরীক্ষার ২-৩ মাস পরেই ফলাফল পেয়ে যাচ্ছে সেখানে আমাদের আইন বিভাগের গুনতে হয় ৭-৮ মাসের দীর্ঘ একটি সময়। যেটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান বলেন, এই সমস্যাটা শুধু যে শিক্ষকদের অলসতার জন্য হচ্ছে এমন না। প্রশাসন চাইলেই এখানে ব্যবস্থা নিতে পারত। ফলাফলের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা হলে এই সমস্যাটা অনেকটাই কমে আসবে। সেই সাথে অনেকদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমরা তেমন কাজ করতে পারিনি। আশা করছি অতি শিগগিরই এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
আইন অনুষদের ডিন ও মাস্টার্সের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে ৫-৬ মাস দেরি হওয়াটা রীতি হয়ে গেছে। শিক্ষকদের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক মাস ধরেই শিক্ষকদের আন্দোলন ও ছাত্রদের আন্দোলনের জন্য ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা ছিল। অফিসের কাজও প্রায় বন্ধই ছিল। এ সময় শিক্ষকেরাও তাদের কাজ ঠিকমতো করেনি। ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হলে আশা করি এ নিয়ে দ্রুত সমাধানে কাজ করব।
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রকিবা নবী বলেন, এই সমস্যাটা অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। এর সমাধান প্রকল্পে আমরা কাজ করছি। এখানে কয়েকজন শিক্ষকের দেরিতে ফলাফল জমা দেওয়ার কারণেই মূলত ফল প্রকাশে দেরি হয়।
মন্তব্য করুন