বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল নিয়ে গত ১ জুলাই থেকে দেড় মাসের অচল অবস্থা কাটিয়ে গতকাল (১৮ আগস্ট) খুলেছে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) একাডেমিক কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় ক্যাম্পাসে নেই শিক্ষার্থীদের আনাগোনা, কোনো কোলাহল। খালি পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোও।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ খুলে দিলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগের ফলে অচল হয়ে পড়েছে পুরো ক্যাম্পাস। এদিকে প্রশাসনহীন ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রম কবে শুরু হবে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
সোমবার (১৯ আগস্ট) থেকে চবির ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেওয়া হলেও পরে সে সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।
চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার কে এম নূর আহমেদ বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যত কোন প্রশাসন না থাকায় খুলবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমির কার্যক্রম শুরু করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা সেটা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন আসা পর্যন্ত এর একাডেমিক কার্যক্রম চালু হবে না। কবে নাগাদ প্রশাসনিক পদে নিয়োগ শুরু হবে এ বিষয়েও কিছু বলতে পারেননি তিনি।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় উদ্বীগ্ন শিক্ষার্থীরা। আশঙ্কা করছেন সেশন জটের। এ বিষয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের রাকিবুল ইসলাম বকেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে বন্ধ পড়ে আছে ক্যাম্পাস। ভিসিসহ প্রশাসনিক পদের প্রায় সবাই পদত্যাগ করেছেন। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিজয় হলেও এখন পর্যন্ত ক্যাম্পাস খুলে না দেওয়ায় সেশন জটের আশঙ্কা করছি। দ্রুত ভিসি নিয়োগ করে ক্লাস শুরু করে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, একদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ অন্যদিকে হলগুলোও সিলগালা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন করে এলটমেন্টও দেওয়া হচ্ছে না। ক্যাম্পাসে গিয়ে অবস্থান করার নিশ্চয়তা পাচ্ছি না বলে আপাতত সব কিছু স্বাভাবিক না হলে ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়া কষ্টকর।
প্রশাসনবিহীন অচলাবস্থায় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম সৌরভ বলেন, অনেকেই ছুটিতে বাড়িতে থাকায় অনেকদিন ক্যাম্পাসে যায়নি। হল প্রশাসনের দায়িত্বে কেউ না থাকায় আমরা হলে ফিরে আমাদের জিনিসপত্র, মালামাল কিছুই ঠিকমতো পাচ্ছি না এই অবস্থায় নিরাপত্তা ঝুঁকির জন্য ই ক্যাম্পাসে যাচ্ছি না।
এদিকে প্রশাসনবিহীন ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রম ও আবাসিক হল খোলার বিষয়টি একদমই অনিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্যাম্পাসে ফেরার আগ্রহ নেই বললেই চলে। তবে অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ছুটির দিনের রুটিনে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে শাটল ট্রেন।
মন্তব্য করুন