শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ও প্রক্টর ড. মো. আব্দুল কাইউম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যৌক্তিক দাবির সঙ্গে উপাচার্য ও প্রক্টরের যথাযথ ভূমিকা না থাকায় তারা ক্ষমা চেয়েছেন।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ক্ষমা চান তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংসদ চালুসসহ ২২ দফা দাবি উথাপন করেন।
বক্তব্যের শুরুতে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল দাবি যথাযথ বাস্তবায়ন করা হবে। আমার সকল কর্মের প্রয়াস শিক্ষার্থীদের নিয়ে। তথাকথিত যারা উপাচার্য তাদের মত আমাকে যেন অহংকার, হিংসা ও বিদ্বেষ স্পর্শ না করতে পারে। সেটিই আমি আল্লাহর কাছে চাইতাম।
ববির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত সুজয় শুভ বলেন, আমি জানি না কারা এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। আমি নিজেই তাদের আমন্ত্রণে গেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাই অবগত ছিল কিনা প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি এসব বিষয়ে কিছুই অবগত ছিলাম না। যারা আয়োজন করেছে তাদের কাছে প্রশ্ন করলে জানা যাবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, আলোচনা সভার বিষয় শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ লিংকার্সে জানানো হয়নি এটা সত্য। তবে আমাদের পূর্বের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাটি করা হয় এবং দাবিগুলো বলা হয়। ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনে উপাচার্য ও প্রক্টরের যে যথাযথ ভূমিকা থাকার কথা ছিল সেটা পালন না করায় তারা ক্ষমা চেয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, সকল শিক্ষার্থীরা জানে না এই আলোচনা সভা কখন, কোথায় হবে। আলোচনা সভায় অনেক ছাত্রলীগ কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। অথচ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অনেকেই অবগত নন। এ ছাড়া উপাচার্য তার আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের পদ থেকে পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, লিংকার্স গ্রুপে অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে পোলে ভোট দিয়েছে। যেখানে ৯৫ শতাংশ এর থেকে বেশি শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছে। সেখানে ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ করার কথা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কথা অগ্রাহ্য কারা করল? এই কথার উপর ভিত্তি করে সকল শিক্ষার্থীদের মতামতকে বাদ দিয়ে এই সিদ্ধান্ত কারা নিল?
উল্লেখ্য, উপাচার্য অধ্যাপক বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন তিনি। প্রক্টর আব্দুল কাইউম বরিশাল শহরের নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
মন্তব্য করুন