শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন করে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর গত ৯ আগস্ট গোবরা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি মেসে স্থানীয়রা ঝামেলা করেন। এ সময় তারা মেসের গেট বন্ধ করে দিলে গেটে হামলা করে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতিতে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, যেখানে সম্পূর্ণ বাংলাদেশে একটি পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে সেখানে গোপালগঞ্জের পরিবেশ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে আমি স্বাধীনভাবে কিছু করতে পারব না, কিছু বলতে পারব না। আমরা শান্তশিষ্টভাবে কোনো আন্দোলন করলে স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় আমাদের ওপর হামলা করে। তারা সবসময় আমাদের খারাপ দৃষ্টিতে দেখে। এমন ভয়ভীতি নিয়ে পড়াশোনা করা যায় না। এই এলাকায় বাইরে থেকে এসে পড়াশোনা করার মতো পরিবেশ নেই।
তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই, আমাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। অন্যথায় আমাদের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে দেওয়া হোক।
সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে কী বলব, আমরা শিক্ষকরাই এখানে নিরাপদ না। আমরা সব সময় ভয়ে থাকি এই বুঝি আমাদের ওপর হামলা হয়। এখানে নিজের নিরাপত্তা নিজেকেই ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে কিছু করার নেই।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টর ড. কামরুজ্জামান বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিব কিন্তু তার জন্য কারোর সাহায্য পাচ্ছি না। বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সবাই জানে। এমন অবস্থায় সবাইকে বলব সতর্কভাবে চলা ফেরা করার জন্য। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে আমাকে জানানোর অনুরোধ করছি। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্থানীয়দের হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ ডিসি অফিসে জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসেছিলাম। তারা আমাকে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের সন্তানের মতো। তাদের কেউ ক্ষতি করবে না। প্রশাসনও এই বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছে। সার্বিক বিষয়ে আমি ভিসি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
মন্তব্য করুন