কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ, মেডিকেল কলেজ, বরিশালের নার্সিং কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)-সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। সকাল থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। আহত শিক্ষার্থীদের সদর হাসপাতাল ও শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এদিকে বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরাও বরিশালের প্রাণকেন্দ্র সাগরদীতে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। গতকাল শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো বরিশাল।
মঙ্গলবারে (১৬ জুলাই) বেলা ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল ও রাত ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখবেন বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গতকাল তিন ঘণ্টা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় রাস্তায় মাগরিবের নামাজ আদায় করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান।
বরিশাল পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জিসান জানান, আমরা সকালে বরিশালের চৌমাথা অবরোধ করে রেখেছিলাম। বিকেলে আমরা এসেছি নতুল্লাবাদ ব্রজমোহন কলেজসহ অন্যদের সঙ্গে সড়ক অবরোধে যোগ দিতে। আমাদের অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরছি না।
বরিশাল ব্রজমোহন কলেজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হুজাইফা জানান, ছাত্রলীগের হামলায় প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এতে পুলিশও আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা কিছু শিক্ষার্থী বরিশালের নতুল্লাবাদ ও কলেজের সামনে অবস্থান করছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হাসিব জানান, আমরা দীর্ঘদিন সরকারের ওপরে আস্থা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছিলাম। গত দুদিন আমরা দেখতে পেলাম আমার ভাইবোনের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। আমরা তারই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে রাস্তায় নেমেছি। আমাদের দাবি ও হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ জানান, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। এমনকি অনেক মেয়েদের ওপরও হামলা করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধিকার আদায় করতে এসে যদি এমন রক্তাক্ত হয়, তাহলে এর দ্বায়ভার কার? আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কেন ব্যাঘাত ঘটালো। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।