কোটা সংস্কারের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে হামলা-পাল্টাহামলা হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সমালোচনা করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহসানুল হক তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। যাদের গড়ার কারিগর আমরা, চোখের সামনে তাদের এ অবস্থা দেখছি নিজের চোখে। একজন শিক্ষক হিসেবে এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই আমার কাছে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. সাদেকুর রহমান তার নিজের ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, বাকরুদ্ধ! আমরা ন্যায়বিচার চাই এবং আমাদের ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন। তিনি লেখার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত রক্তাক্ত ছবি সংযুক্ত করেন।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম হাসনা লিখেছেন, এই জুলুমের শাস্তি না পেয়ে ওদের মরণ হবে না। এ সময় তিনি একটি ছবি জুড়ে দেন। এতে দেখা যায়, আন্দোলনকারী এক ছাত্রীকে মারধর করছে একদল তরুণ।
দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন রিমি ও টুম্পা সাহা ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, দমবন্ধ পরিস্থিতি ও কিছু অভিব্যক্তি। গতকাল (১৪ জুলাই) থেকেই শিক্ষক হিসেবে নিজের অবস্থান সম্পর্কে যথেষ্ট নাজুক বোধ করছি। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়ানো আজকের ছবিগুলো ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে। আমার মনে হয় মানুষ হিসেবে ন্যূনতম বিবেক-বিবেচনা যাদের আছে, তাদের প্রত্যেককেই কষ্ট দিচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধানের পথটা ভাবার কথা ব্যক্ত করেন তিনি। সর্বোপরি, আমরা সাধারণ শিক্ষক হিসেবে নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করতেই যেখানে হিমশিম খাচ্ছি, সেখানে বিশেষ কিছু বলার ভাষা নেই। কেবল সরকারের প্রতি অনুরোধ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিকতা ও যথার্থতা বিবেচনায় দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধানের। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারাও যৌক্তিক দাবি আদায়ে যৌক্তিক পথ অনুসরণ করুন। জনদুর্ভোগের কারণ হওয়া থেকে বিরত থাকুন। টুম্পা সাহা এমন পরিস্থিতির জন্য ধিক্কার জানান। প্রতিবন্ধী ও উপজাতি বাদে সব কোটা বাতিলের কথাও জানান তিনি।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক আইয়ুব আলী তার ফেসবুক ওয়ালে জানান, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিচয় দিতে সংকোচ বোধ করি। আজকে দেশে চলমান পরিস্থিতির জন্য আমি ব্যথিত ও লজ্জিত!
আইন বিভাগের কায়সার আহমেদ জয় ফেসবুক ডে’তে লেখেন, আমরা যে পরিস্থিতি দেখছি তা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নয়।
এভাবে শিক্ষকরা একে একে ফেসবুকে তাদের মতামত ব্যক্ত করে চলেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের পথ খুঁজছেন তারা। আবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যথিত হয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা।