কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। সোমবার (১৫ জুলাই) মধ্যরাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় পালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
জানা গেছে, সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ১২টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা যখন ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান করছিল এ সময় বহিরাগত বেশ কিছু কর্মীদের ডেকে নিয়ে আসে ছাত্রলীগ। এরপর ছাত্রলীগ তাদের সঙ্গে নিয়ে ভিসির বাসভবনের দিকেে এগোতে থাকে। এ ঘটনা জানতে পেরে ভিসির বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করা সাধারণ শিক্ষার্থীরা গেট লাগিয়ে দেয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় এবং গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এমন সময় পুলিশ এলেও তারা ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেনি ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ গেট খুলে ভিসির বাসভবনের ঢুকে পড়ে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তবে এ ঘটনায় কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ছাত্রলীগের হামলা থেকে বাঁচতে ফেসবুক লাইভে এসে বাঁচার আকুতি জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে ছাত্রলীগ ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আবার বুলেট এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় সাংবাদিকরা নিজেদের আইডি কার্ড প্রদর্শন করলেও পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে ৪ সাংবাদিক আহত হন। তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে।
আহত চার সাংবাদিক হলেন- বণিক বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী মামুন, দৈনিক বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আব্দুর রহমান সার্জিল, দৈনিক জনকণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ওয়াজহাতুল ইসলাম ও বাংলাদেশ টুডের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জোবায়ের ইসলাম।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন। অন্যদিকে পুলিশ ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে টিয়ার শেল এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।
তারা আরও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজোয়াঁ যান এবং বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করেছে। বর্তমানে শিক্ষার্থী এবং পুলিশ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
মন্তব্য করুন