ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদুল্লাহ হলের ছাদ দখল করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর পাথর ছুড়ে হামলা চালিয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা। এতে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর থেকেই ঢাবিতে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীরা। এদিন বিকেলে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল ও অমর একুশে হলে বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপ, গুলি নিক্ষেপেরে মতো ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীরা শহীদুল্লাহ হলের ছাদ দখলে নিয়ে সেখান থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করে।
এ ছাড়া ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ছাত্রদলের লোকজন শহীদুল্লাহ হল ও ফজলুল হক হল এলাকায় গিয়ে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করেছে। তারা বেশ কয়েকটি কক্ষেও ভাঙচুর চালায়। অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সোমবার দুপুরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে জড়ো হচ্ছিল শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর ও আশপাশের এলাকায় যখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়, তখনই কার্জন হলের বায়োক্যামেস্ট্রি গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বহিরাগতরা। এরপর হলগুলোতে ছাত্রলীগের পদধারী নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়। ওই সময়ে বেশ কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। তারা হলের ভেতরে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি হলগুলোর ছাদেও অবস্থান নেয়। তখন ছাদ থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ইট পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি হলগুলোর ভেতরে গুলিরও শব্দ পাওয়া যায়।
শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ কালবেলাকে বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে তারা মধুর ক্যান্টিন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছিলেন। ওই সময়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের নিয়ে শহীদুল্লাহ হলে ঢুকে টার্গেট করে ভাঙচুর চালায়। এরমধ্যে তার ২৩২ নম্বর কক্ষসহ পদধারী নেতাদের কক্ষগুলো ভাঙচুর করে অস্ত্রধারী হামলাকারীরা।
তার দাবি, এই হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রদলের লোকজন ছিল। তারা আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। হলের ছাদে গিয়ে অবস্থান নিয়ে বৃষ্টির মতো ইট ও ককটেল ছুড়েছে।
অবশ্য ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গনেশ চন্দ্র সাহস কালবেলাকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং তারা আন্দোলনের সফলতা চাচ্ছেন। কিন্তু অস্ত্রবাজি তাদের কাজ নয়। দিনভর ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে যেতে পারে না, বাসায় থাকতে পারে না। এই অবস্থায় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাওয়ার অভিযোগটি হাস্যকর।