অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশনসংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে অচলাবস্থা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।
জারিকৃত ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৫, ২৬, ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।
ওই কর্মবিরতির ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দাপ্তরিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। উপরন্তু কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকালের হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করা নিয়ে জটিলতা ও দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘হলের ডাইনিং বন্ধ থাকায় আমাদের খাবারের জন্য বাইরের হোটেল ও ক্যান্টিনে যেতে হচ্ছে। সেগুলো তুলনামূলক নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় আমরা সেশনজটে পড়ছি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতোমধ্যে অনেক পিছিয়ে আছি।
এ ছাড়াও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ শোয়েবুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই কোভিডের কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে, আমাদের ব্যাচের অনেকেই তাদের ডিগ্রি কমপ্লিট করে ফেলেছে। এদিকে আমরা এখনও চতুর্থ বর্ষে উঠেছি মাত্র। সেশনজটের কারণে চাকরি ক্ষেত্রেও ভোগান্তি পোহাতে হবে এ ভয়ে আছি।
কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সমাপনী বর্ষের (১৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরাও। অ্যাকাডেমিক সকল কার্যক্রম শেষ হলেও সনদ পেতে দেরি হচ্ছে তাদের। এতে তারা চাকরি বা উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে পারছেন না ।
এ নিয়ে সমাপনী বর্ষের তাসনিয়া রহমান প্রমি জানান, ‘কর্মবিরতির জন্য ১১ তারিখ ফাইনাল রেজাল্ট দিবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান। সেই সঙ্গে ক্লিয়ারেন্স এর কাজও করতে পারছি না। সঠিক সময়ে সার্টিফিকেট ও পাবো না। ফাইনাল রেজাল্ট ছাড়া মাস্টার্স কিংবা জবে এপ্লাই করতেও সমস্যা হচ্ছে।’
এদিকে সমন্বিত ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিতব্য ২০২৩-২৪ সেশনের নতুন শিক্ষার্থীদের শেষ ধাপের ভর্তি কার্যক্রম ৩-৪ জুলাই হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ১৪-১৫ জুলাই নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত এই একতরফা সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে রাজি নয় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এভাবেই কর্মবিরতি চলতে থাকবে বলে জানাম তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের চলমান পরীক্ষাগুলোও স্থগিত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, আমাদের আর একটি পরীক্ষা বাকি ছিল, সেটি আটকে আছে। এ অবস্থায় আমরা একটা দোটানার মধ্যে আছি। শিগগিরই এই অবস্থার অবসান হোক।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবি শিগগিরই যেন এই অচলাবস্থার অবসান ঘটে। তারা যেন তাড়াতাড়ি শ্রেণিকক্ষে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে যোগদান করতে পারে, এটাই তাদের প্রত্যাশা।
মন্তব্য করুন