সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) কোটা বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় বংশাল মোড় ও আলুবাজার মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে গুলিস্তানের দিকে অগ্রসর হয়েছেন জবি শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় এ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকদিন ধরে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছেন জবি শিক্ষার্থীরা। এর আগেও কোটা বাতিলে চার দফা দাবি পুরান ঢাকা এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন তারা।
জবি শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন লাগাতার চলবে। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্রভাবে কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এদিকে, ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিভিন্ন হল ও বিভাগের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় তারা ‘ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড’, ‘একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে, আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় বন্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর রোড এবং ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়কের যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা ব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত একটি ব্যবস্থা। এটি সাময়িক একটি সিদ্ধান্ত ছিল। যা পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়ভাবে চলমান ছিল। এর মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তিরা চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ পেয়েছে। আমরা চাই যে কোনো মূল্যে কোটা বাতিল করা হোক। অন্যথায় এই আন্দোলন চলমান থাকবে।
এর আগে গত ৬ জুলাই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শেষে সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মহাসড়ক অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। যাকে আন্দোলনকারীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন