গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশনসংক্রান্ত (প্রত্যয় স্কিম) প্রজ্ঞাপনকে 'বৈষম্যমূলক' আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহার, পূর্বের পেনশন ব্যবস্থা চালু, স্বতন্ত্র পে স্কেল প্রবর্তন এবং শিক্ষকদের সুপারগ্রেডের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি। এ ছাড়া পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছে সংগঠনটি।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে ঢাবি শিক্ষকরা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এদিন সকাল থেকেই কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখেন তারা।
এর আগে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির ডাকে সাড়া দিয়ে গত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেন ঢাবি শিক্ষকরা। যার ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দাবি আদায় না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ৩ দফা দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে না নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে আমাদের সুপারগ্রেড দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো এক অদৃশ্য শক্তিবলে আমরা পাইনি। আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আমাদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর কথা থাকলেও তা আমরা পাইনি। এরপর আবার আমাদের ওপর প্রত্যয় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি ৩ শতাধিক শিক্ষক। সুতরাং আমাদের এই আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক। তাই আমরা বলতে চাই, আমাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন থামাব না।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, এই আন্দোলন থেকে শিক্ষক সমাজ পিছু হটবে না। এই আন্দোলন চলমান থাকবে, আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। এই আন্দোলন নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে৷ এই আন্দোলন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নয়। এটা শুধু প্রত্যয়ের বিরুদ্ধে, যারা এই স্কিম চালু করে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করতে চাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে।
এর আগে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তার ধারাবাহিকতায় ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এরপর ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিনদিন সারা দেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়। পরে গত ৩০ জুন পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করা হয় এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়।
মন্তব্য করুন