আবারও ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৬ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। পরে কোটার প্রতিবাদে একটি পথ নাটক উপস্থাপন করেন আন্দোলনকারীরা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা, ‘আমার সোনার বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হবে অবসান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
আন্দোলনকারীরা চারটি দাবি উত্থাপন করেন এবং সেই সঙ্গে হাইকোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল হওয়াকে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেন।
শিক্ষার্থীদের চারটি দাবি হলো- সকল কোটা ১০ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনতে হবে, একজন কোটা সুবিধা ভোগকারী জীবদ্দশায় একবার কোটা সুবিধা নিতে পারবে, এতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রতি দশ বছর পর পর জনশুমারিতে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে এবং সমীক্ষার মাধ্যমে কোটার যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করা। নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা করা।
আন্দোলনের মুখপাত্র পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, আমরা অনেক সময় দেখি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করে। আমরা বলতে চাই নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ আপনারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কানামাছি খেলবেন না।
তিনি বলেন, আপনারা ২০১৮ সালে এমন পরিপত্র কেন জারি করলেন যা বিচার বিভাগে টিকল না। এটা আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা। ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল হলে সবার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যর্থতা প্রমাণ করে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাবরিনা ইসলাম মিথিলা বলেন, প্রথমত ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার। দ্বিতীয়ত, ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ একবার কোটা ব্যবহার করতে পারবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তৃতীয়ত, প্রতি জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে যাব না। আমরা চাই সমতা ও বৈষম্যবিহীন সমাজ।
প্রসঙ্গত, এ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় দুই হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর আগে গত ৬ জুন, ৩০ জুন, ১ জুলাই ও ৪ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মন্তব্য করুন