সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন এবং কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোটাব্যবস্থা বাতিল চাই না, কোটার সংস্কার চাই। যারা কোটা পাওয়ার অধিকার রাখে তাদেরকে অবশ্যই সেই অধিকার দেওয়া হোক। কিন্তু অতিরিক্ত কোটা প্রদানের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মেধাবীদের বঞ্চিত করার সুযোগ আমরা মেনে নিতে পারি না। এ সময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
যাদের কোটা আছে জীবনদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে। প্রতি ১০ বছর পর পর জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে যাতে আমরা বুঝতে পারি কোটার প্রয়োজনীয়তা কেমন এবং কোটার মূল্যায়ন করা। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিষয়টি নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এ সময় পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর কোটা নিয়ে নিয়মিত আপিল করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
গত ৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
মন্তব্য করুন