সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির ‘প্রত্যয়’ স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশন নামে অফিসারদের নবগঠিত সংগঠন একটি ব্যানার নিয়ে আন্দোলনরত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগ দিতে চাইলে প্রথমে বাদানুবাদ ও পরে দুই গ্রুপ হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময়ে প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে উভয় গ্রুপ হামলা ও পাল্টা হামলা চালালে কয়েকজন আহত হয়।
জানা যায়, অফিসার অ্যাসোসিয়েশনে সাবেক মেয়রপন্থিদের সংখ্যাধিক্য হলে বর্তমান মেয়র অনুসারীরা আরেকটি অফিসার অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তুললে দুই গ্রুপের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. বাতেন চৌধুরী জানান, ‘যারা সরাসরি অফিসার ও যারা পদোন্নতি নিয়ে অফিসার হয়েছে তাদের মধ্যে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের বেশ কিছু সদস্য আহত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা এস এম ইকবাল বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পেনশন স্কিমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছিলাম। এসময় হামলার ঘটনা ঘটে। আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে উপপরিচালক আবুল হোসেনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে। হঠাৎ করে আজকে ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের নামে ব্যানার নিয়ে আমাদের সামনে এলে স্বভাবতই আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসারদের একমাত্র স্বীকৃত সংগঠন আমরা। এ সময় আমাদের ওপর প্রথমে হামলা হয়, পরে পাল্টা হামলা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক্তার তানজিম হোসেনসহ চারজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরও অন্তত ৫-৭ জন সামান্য আহত হয়েছেন।’
অপরদিকে ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, চলমান কর্মসূচি চলাকালে বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে অফিসার্স অ্যাসোশিয়েশনের লোকেরা। তারা এ হামলার নিন্দা জানান এবং দাবি আদায়ের সংগ্রাম চলবে বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, ‘নিজস্ব অবস্থান নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের দুই গ্রুপ পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। পরিস্থিতি কিছুটা অশান্ত হয়। পরে পুলিশ ও শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো বিশ্লেষণের কাজ শুরু করেছি।’
মন্তব্য করুন