ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৪, ০৫:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। ছবি : কালবেলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। ছবি : কালবেলা

উৎসবমুখর পরিবেশে আজ সোমবার ১০৪তম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ১৯২১ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’।

দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, কেক কাটা, থিম সং পরিবেশন, শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভা।

সকাল ১০টায় টিএসসির পায়রা চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, থিম সং পরিবেশন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এর আগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাইবৃন্দের অংশগ্রহণে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাদ্দাম হোসেন। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে দারিদ্র্য, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তরুণদের সামাজিক দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করতে হবে। তারুণ্য জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময়কে যথাযথভাবে সদ্ব্যবহার করে মেধা ও মননকে শানিত করতে হবে এবং প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত হতে হবে। নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা মানুষকে জ্ঞানী, দক্ষ এবং মূল্যবোধ সম্পন্ন করে তোলে। তাই শিক্ষার মাধ্যমেই পরিবর্তন সম্ভব। জ্ঞান অর্জনের অন্যতম মাধ্যম উচ্চশিক্ষা। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের একটি লক্ষ্য 'ট্রানজেকশনাল', অপরটি 'ট্রান্সফরমেশনাল'। প্রথম লক্ষ্যটির ক্ষেত্রে দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়। উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শুধু ভালো চাকরি পাওয়া নয়, বরং এক্ষেত্রে জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ মানবিক বিকাশ ঘটে এবং সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সে সক্ষম হয়। একই সঙ্গে তার মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয় এবং সে বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অর্জন করে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে গবেষণা-প্রধান 'আর আই' (আর ওয়ান) ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, এই লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই 'অ্যাকাডেমিক মাস্টার প্ল্যান' এবং ‘অ্যাকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান' প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। জাতীয় নেতৃবৃন্দ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, অ্যালামনাই, ব্যবসায়ীসহ সকলের সহযোগিতায় গবেষণা, উদ্ভাবন ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের শিক্ষা মানচিত্রে অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কৃতিত্বপূর্ণ নজির নেই। দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য অবদান তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, আত্মনির্ভরশীল, আত্মমর্যাদাশীল ও স্বাবলম্বী জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, দক্ষতা-ভিত্তিক, আধুনিক, প্রায়োগিক ও জনকল্যাণমুখী শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে আমরা তরুণ প্রজন্মকে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করতে চাই। শিক্ষার্থীদের হতাশামুক্ত শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই প্রথম বর্ষের সকল অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে তিনি অ্যালামনাই ও ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্য' শীর্ষক গ্রন্থের ২য় খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ অতিথিবৃন্দ এই মোড়ক উন্মোচন করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মায়ের কোলে ফিরল বিক্রি হওয়া সেই নবজাতক

কোটার বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি, জনসমুদ্র শাহবাগ

ইসরায়েলের নতুন আদেশ নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জকে জয় করতে চাই : পলক 

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বেতন ৪০ হাজার

পিতৃত্বকালীন ছুটির নির্দেশনা চেয়ে ৬ মাসের শিশুর হাইকোর্টে রিট

সেরাটা দিতে না পারার আক্ষেপ সেলেসাওদের

এজলাস উদ্বোধন করলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক

রহস্যজনকভাবে উধাও ৩১ হাজারের বেশি নারী

ঢাকায় সাউথ ইস্ট এশিয়া রেগুলেটরি নেটওয়ার্কের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত

১০

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো প্লাস্টিনেশন ল্যাবরেটরি

১১

জীবিত থাকা অবস্থায় চল্লিশার আয়োজন করলেন মারফত

১২

বেজবাবা সুমনের সফল অস্ত্রোপচার

১৩

অষ্টম শ্রেণি পাসে সুপ্রিম কোর্টে চাকরির সুযোগ

১৪

টাঙ্গাইলে বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ২, আহত ১০

১৫

দাবি মানলেই ক্লাসে ফিরবেন ঢাবি শিক্ষকরা 

১৬

দুই পুলিশ কর্মকর্তার ২১ বছরের জেল

১৭

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ‘জাতীয় কৌতুক’ : রিজভী

১৮

উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ কঠিন হবে, বললেন ব্রাজিলের কোচ

১৯

সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বেড়েই চলছে

২০
X