গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন (প্রত্যয় স্কিম)-সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে আন্দোলনের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। একইসঙ্গে দাবি আদায় না হলে আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কোনো কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়া ও কোনো রকম ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ না নেওয়াসহ সর্বাত্মক কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার (৩০ জুন) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি উপলক্ষে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।
তিনি বলেন, আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দুঃখের বিষয়, এমন একটি দিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রাজপথে থাকতে হবে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তাকে জানিয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কোনো কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অংশ নেবে না।
এ ছাড়া এদিন শিক্ষক সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সর্বাত্মক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সেগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের সব ক্লাস বন্ধ থাকবে; অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস বন্ধ থাকবে; সব পরীক্ষা বর্জন করা হবে। মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না; বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন; একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না; অনুষদের ডিনরা ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীন বরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না। কোনো সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না; বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা ইনস্টিটিউটের অফিস, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। সান্ধ্যকালীন, শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাস বন্ধ থাকবে; বিভিন্ন গবেষণাধর্মী সেন্টারের পরিচালকরা কোনো সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন; বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা প্রাধ্যক্ষ অফিস বন্ধ রাখবেন; প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ রাখবেন।
এতে আরও বলা হয়, আমাদের এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসনে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলন। বৈষম্যমূলক ও মর্যাদাহানিকর প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন, প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।
মন্তব্য করুন