গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন (প্রত্যয় স্কিম)-সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ বাতিলের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ প্রেক্ষিতে রোববার (৩০ জুন) সকাল পৌনে ১০টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর একে একে সকলেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বেলা ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন তারা।
এসময় তাদের ‘দুনিয়ার মজদুর, এক হও এক হও’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘বৈষম্যের প্রজ্ঞাপন বাতিল করো, করতে হবে’; ‘সর্বজনীন পেনশন, মানি না মানবো না’; ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, প্রত্যয়ের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
পরিষদের নেতাকর্মীরা জানান, আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা অবস্থান, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি চালাবেন। তাদের দাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।
তারা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত বৈষম্যমূলক পেনশনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চরম বৈষম্যের শিকার এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এর ফলে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে আসতে আগ্রহী হবে না।
তারা আরও বলেন, এ প্রজ্ঞাপন সব শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, তা সবকিছুকে খুব খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। এমন একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে তা কেবল আমাদের যৌক্তিক দাবি তথা প্রত্যয় স্কিম বাতিলের মধ্যে দিয়েই নিরসন সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রত্যয় স্কিম বাতিল করতে হবে। অন্যথায়, আমরা আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো।
প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল মোতালেব, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, কর্মচারী সমিতির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন, কারিগরি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুল আলম বাদল, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহজাহান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়াসহ অনেকেই বক্তব্য প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন