রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর হামলার শিকার হয়েছিল ৩০ জনের বেশি সাংবাদিক। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরে কমিটিতে পুলিশের অন্য সদস্যদের যুক্ত করা হবে। এর আগে হামলার শিকার সাংবাদিকরা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে স্মারকলিপি দেন আহতরা। এসময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির বার্তা প্রধান (হেড অব নিউজ) শাকিল আহমেদ, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের সদস্যসচিব মানস ঘোষ, সাংবাদিক নিজামুল হক বিপুলসহ হামলার শিকার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। একইসঙ্গে হামলার শিকার সাংবাদিকরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে দৈনিক কালবেলার নিজস্ব প্রতিবেদক রাফসান জানি বলেন, হামলাকারীরা প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। সাংবাদিকদের মারধরের পাশাপাশি তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়, ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এতকিছুর পরও তারা প্রমাণ নষ্ট করতে পারেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে হামলাকারীদের ফুটেজ, ছবি রয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পর পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি সম্পদের ক্ষতি করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু এতদিনেও সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীরা চিহ্নিত হয়নি। আমরা চাই, হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর আমি পুলিশ সদস্যদের যেমন খোঁজ নিয়েছি, তেমনিভাবে আহত সাংবাদিকদেরও খোঁজ নিয়েছি। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে আঘাত করা হয়েছে, এটা হামলার ধরন দেখলেই বোঝা যায়। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর আরও বেশি করে পেটানো হয়েছে। সাংবাদিকদের কেন হামলা করা হলো তা বিশ্লেষণের দাবি রাখে। পৃথিবীর অন্য কোথাও এমনটি দেখা যায় না।
জড়িতদের চিহ্নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে বিচারের জন্য পাঠানো হলো পুলিশের কাজ। এটা করার জন্য আমাদের সর্বাত্মক আন্তরিকতা রয়েছে। ঘটনাস্থলগুলো ছবি, ফুটেজ রয়েছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে। আমাদের ছোট একটা টিম টাস্কফোর্সের মতো করে কাজ করবে।
মন্তব্য করুন