কখনো বলছে একটি সিক্রেট তেলেই দূর হবে আপুদের সিজারের কাটা দাগ। আবার কখনো বলছে সেই তেলেই দূর হবে মেছতা। আবার কখনো পেটের মধ্যে লাগাচ্ছে সেই তেল। তার সিক্রেট তেলেই নাকি রয়েছে জাদু। এসব বিজ্ঞাপন দিয়েই প্রতারণার ফাঁদ পেতে পণ্য বিক্রি করছে ‘ওয়াফিয়া ট্রেডিং করপোরেশন’ নামের অনলাইন শপ।
প্রতিদিনই নানা অঙ্গভঙ্গি করে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে প্রতিষ্ঠানটি। তার জাদুকরী ক্রিমে নাকি মুহূর্তেই দূর হয়ে যাবে শরীরের সকল গোপন স্থানের দাগ। তাও নাকি কোনো সাইড ইফেক্ট ছাড়া। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছে, এটি একেবারেই অসম্ভব। বরং এসব অনুমোদনহীন পণ্য ব্যবহারে রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকির আশঙ্কা।
রাজধানীর ঢাকায় কোথাও কোনো শোরুম নেই তাদের। পণ্য যাচাইয়ের জন্য ওয়াফিয়া ট্রেডিং করপোরেশনের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দেখে একটি পণ্য অর্ডার করা হয়। কয়দিন পর পার্সেলে আসে সেই পণ্য। সেই পণ্যের গায়ে কোথাও নেই কোনো আমদানীকারকের সিল বা স্টিকার।
বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করলেও তা বাজারজাত করতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো পণ্য সেবা বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করলে অনুর্ধ এক বছরের কারাদণ্ড অনুধিক ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতি: সচিব) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান ইসলাম কালবেলাকে বলেন, প্যাকেটজাত পণ্য নিয়ে বিএসটিআইয়ের একটি আইন আছে। যেখানে বলা আছে পণ্যের প্যাকেট কিভাবে করতে হবে, কি কি তথ্য থাকা লাগবে। বিশেষ করে আমদানীকারকের স্টিকার, মূল্য, উৎপাদন এবং মেয়াদের তারিখ অবশ্যই থাকতে হবে। ইদানীং এসব বিষয়ে অনেক ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ‘ওয়াফিয়া ট্রেডিং করপোরেশনের’ ফেসবুক পেজে দেওয়া নাম্বারে কল করা হলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সঙ্গেই কল কেটে দেয়। পরবর্তীতে একাধিকবার কল করা হলেও কল রিসিভ করেননি।
অন্য নাম্বার থেকে কল করা হলে প্রতিষ্ঠানের মালিক দাবি করা মুরতাদ আমিন জানান, তাদের পণ্যগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা। তারা আমদানিকারক থেকে নিয়েছেন। যদিও আমদানিকারকের কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
মন্তব্য করুন