আবু সালেহ মুসা
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

একই ব্যক্তি ৫ টিভির সাংবাদিক, দুদকেরও বড় কর্মকর্তা

ডিবির হাতে গ্রেপ্তার প্রতারক চক্র। ছবি : কালবেলা
ডিবির হাতে গ্রেপ্তার প্রতারক চক্র। ছবি : কালবেলা

একইসঙ্গে অন্তত পাঁচটি টেলিভিশন ও একাধিক প্রিন্ট মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিক তারা। সঙ্গে চাকরি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনে। দুদকের বড় কর্মকর্তা হিসেবে ফোনও করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের কাছে। মোহাম্মদ রিয়াজ ও ফিরোজ খান দুই ব্যক্তির সম্পর্ক শ্যালক-দুলা ভাই। এই শ্যালক-দুলাভাই মিলে গড়ে ‍তুলেছেন সাংবাদিক-দুদক প্রতারণার ফাঁদ। তবে শেষ পর্যন্ত ডিবির হাতে ধরা পড়তে হয়েছে তাদের।

কখনো দুদকের কর্মকর্তা, আবার কখনো সাংবাদিক সেজে প্রতারণা করতেন শ্যালক-দুলাভাই। গণমাধ্যমে কোনো দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ পেলেই ফেলতেন প্রতারণার জাল। যে কোনো উপায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির নম্বর সংগ্রহ করে দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন দিতেন তাকে। ফোনে জানানো হতো— তার করা দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে দুদক।

তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি চাইলে বিষয়টি রফাদফাও করতে পারবেন, দেওয়া হতো এমনও আশ্বাস। জানাতেন, তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠালেই তদন্ত রিপোর্ট সহজ করে দেওয়া হবে। এভাবেই রিয়াজ ও ফিরোজ নামে দুই ব্যক্তি বিভিন্নজনের সঙ্গে প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। সম্পর্কে তারা শ্যালক দুলাভাই।

বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ এলে অবগত নড়েচড়ে বসে সংস্থাটি। পরে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার ওপর ভিত্তি করে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল ফোন, ২৯টি সিম কার্ড, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও দুদকের আইডি কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের নামে বানানো ৫০টি ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়।

এই চক্রকে গ্রেপ্তারের পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, চক্রটি প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, ওয়ার্ড কমিশনারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হলে তারা সে সংবাদের ডিটেইলস জেনে নিত। পরে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন দিত। পরে তদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনের কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিত।

তিনি আরও বলেন, তারা কখনো এনটিভির সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার, কখনো এসটিভির সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কমিশনারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতেন।

প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকেই দুদকে খোঁজ নেন। তবে তাদের ব্যাপারে দুদক থেকে কেউ ফোন করেনি। যে নামে তাদের ফোন করা হয়েছে, সেই নামেও কেউ নেই। এমন ঘটনায় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর তদন্তে নেমে চক্রটির সন্ধান পায় ডিবি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া আরেক বাংলাদেশি যুবক নিহত

জাফরুর নতুন সভাপতি  আরেফিন অডেন, সম্পাদক আকতারুল

আশুলিয়ায় সরকারি হাসপাতালের দাবিতে শ্রমজীবী মানুষের মানববন্ধন

বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফকে দিল ভারতীয়রা

‘এখন কেউ চাইলেই ইমামকে বহিষ্কার করতে পারবে না’

বাংলাদেশের কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: উইলিয়ামস

বর্তমান অবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব নয় : খলিলুর রহমান

জলকেলিতে মাতলেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা

অটোরিকশা নালায় পড়ে শিশু নিখোঁজ, মা উদ্ধার

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

১০

কুয়েটে আন্দোলনকারীদের গ্রাফিতিতে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি 

১১

এবার লা লিগার সূচি নিয়ে বার্সা কোচের ক্ষোভ

১২

ইসরায়েলের ‘অসম্ভব শর্ত’, প্রত্যাখ্যান করল ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা

১৩

নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি : এ্যানি

১৪

বিশ্বকাপে পাকিস্তান, জ্যোতিদের যে সমীকরণ

১৫

‘হাসিনার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সবাইকে সজাগ হতে হবে’

১৬

আফগান সরকারকে সুখবর দিল রাশিয়া

১৭

কাশ্মীর পাকিস্তানের ‘গলার শিরা’, ভারতের প্রতিক্রিয়া

১৮

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন যাত্রা নিয়ে যা বলছেন বিশ্লেষকরা

১৯

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে না পেয়ে ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার 

২০
X