আকরাম হোসেন
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সন্তানের নির্যাতন থেকে বাঁচতে মায়ের মামলা

খুরশিদা আক্তার। ছবি : কালবেলা
খুরশিদা আক্তার। ছবি : কালবেলা

স্বামী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। পড়াশোনা করিয়ে সন্তানদের করেছেন প্রতিষ্ঠিত। গর্ভজাত সেই সন্তানের নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে আদালতের দারস্থ হয়েছেন ৭২ বছর বয়সের বৃদ্ধা খুরশিদা আক্তার।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের মায়ের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বড় সন্তান হামিদুল হক সোহেল, মেয়ে তাসলিমা আক্তার সুমি ও তার জামাতা সেলিম রেজার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সমাজের উচ্চশিক্ষিত পরিবারে মায়ের প্রতি সন্তানদের এমন আচরণে উষ্মা প্রকাশ করেন আদালত।

ভুক্তভোগী মা খুরশিদা আক্তার বলেন, ‘আমার কপাল খারাপ। আমি হালাল টাকা দিয়ে ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করিয়েছি। তারা এখন প্রতিষ্ঠিত। তারা এখন আমার শেষ সম্বলটুকু লিখে নিতে আমার ওপর নির্যাতন করছে।’

খুরশিদা আক্তারের এক ছেলে ও দুই মেয়ে উচ্চশিক্ষিত ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তা সত্ত্বেও মায়ের শেষ সম্বলটুকু লিখে নিতে নানা সময়ে চাপ দেন বড় ছেলে সোহেল ও মেয়ে সুমি। শেষ সম্বলটুকু লিখে না দিলে চলে মায়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন।

প্রতিনিয়ত নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে একবার থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন তাদের বিরুদ্ধে। এরপর শরীরে হাত উঠলে সন্তানদের নির্যাতন সইতে না পেরে আদালতের দারস্থ হন এই মা।

আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযুক্ত ওই দুই সন্তানসহ জামাতা সেলিম রেজার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলে জানান ভুক্তভোগী খুরশিদার আইনজীবী।

আইনজীবী জসিম উদ্দিন বলেন, আসলে বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ১৯৮৩ সালে যে সম্পদ ক্রয় করেছেন সেখান থেকে তার দ্বিতীয় সন্তানকে তিনি একটি ফ্ল্যাট লিখেও দিয়েছেন। কিন্তু সন্তানরা দেখাশুনা না করায় তিনি ওই জমির একটি অংশ বিক্রি করে দেন তার চিকিৎসার জন্য। তবে জমি বিক্রির টাকার জন্য সন্তানরা ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। এ ছাড়া বাকি সম্পদ ওই সন্তানদের লিখে দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীর ওপর চাপ দিতে থাকে। পরে তিনি আদালতের দারস্থ হন। অসুস্থ ৭২ বছরের একজন মাকে আদালতে দেখে বিচারক নিজেই তার সঙ্গে কথা বলেন এবং তার সমস্যার কথাগুলো অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনেন। একপর্যায়ে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।’

জানা যায়, রাজধানীর কাফরুল থানার উত্তর ইব্রাহিমপুরের প্রয়াত ওসি হাফিজুর রহমানের এক ছেলে, দুই মেয়ে। তাদের পরিবার নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করেন খুরশিদা আক্তার। ভরণপোষণের টাকা জোগার করতে প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে নিজ সম্পতি বিক্রি করেন তিনি। সেই টাকার ভাগসহ বাকি সম্পতি লিখে দিতে বৃদ্ধ মায়ের ওপর নানা সময় বল প্রয়োগ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মেয়ে তাসলিমা সুমি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, মেয়ের জামাতা বেসামরিক বিমান ও চলাচল কর্তৃপক্ষের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিএসও এবং ছেলে হামিদুল হক সোহেল বেসরকারি একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুর জিলা স্কুল মাঠ নয়, মাহিগঞ্জ কলেজে হচ্ছে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশ

ঢাকা লিগে নিষিদ্ধ ৮ ক্রিকেটারসহ ৯জন

মালয়েশিয়ায় সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন

জীবননগরে সাবেক পৌর মেয়র গ্রেপ্তার

অ্যান্টিগায় মাঠে নামলেই রেকর্ড করবেন মিরাজ

ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি খালেদা জিয়াকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি আলালের

কনসার্ট শেষে মাঠ পরিষ্কার করল ঢাকা কলেজ ছাত্রদল

পটুয়াখালীতে শ্রমিকদল নেতা বহিষ্কার

ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির পেছনে কলকাঠি নেড়েছে সৌদি, বুশরা বিবির দাবি

১৫ বছর পর আগুন…

১০

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান

১১

ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হবে : বাকৃবি উপাচার্য

১২

চাকরি দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স 

১৩

ফ্যাসিবাদ নির্মূলে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান : আদিলুর

১৪

সেতু সংস্কারে ধীরগতি, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

১৫

লেবানন থেকে আরও ৮২ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন

১৬

জবি শিক্ষককে হত্যার হুমকির অভিযোগ, থানায় জিডি

১৭

আইপিএল নিলামের তালিকায় ফিরলেন আর্চার

১৮

সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বৃদ্ধ নিহত

১৯

আখাউড়া সীমান্ত থেকে দুই নারী আটক

২০
X