রাজেশ সরকার নামে এক ব্যক্তি তার ভাগ্নের চিকিৎসার জন্য পার্শবর্তী দেশ ভারতে গিয়েছিলেন। ভাগ্নের বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের জন্য ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন হয় তার। একটি ফোন ফ্যাক্সের দোকান থেকে দেশে থাকা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আর এই সময় পাশে ছিল আরও দুজন। যারা রাজেশের কাছে পরিচয় দেয় ইলাহী খান ও প্রিতম হালদার নামে। তারা রাজেশকে জানায়, দেশে আমার স্বজন আছে। তারা অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ভারত আসবে। তাদের কাছে টাকা দিয়ে দিলে আমরা এখানে টাকা দিয়ে দিব।
ইলাহী ও প্রিতম জানায়, দেশে জাহিদ এবং শফিকুল নামে দুজনের কাছে টাকা দিয়ে দিলেই হবে। সরল বিশ্বাশে রাজেশ তার স্বজনদের জাহিদ ও শফিকুলের কাছে টাকা দিতে বলে। স্বজনরা জাহিদ ও শফিকুলের দেয়া একাউন্টে তিন ধাপে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা দেয়। টাকা দেওয়ার পর ইলাহী ও প্রিতমের কাছে টাকার জন্য যান রাজেশ। কিন্তু তারা জানায়, কোনো টাকা আসেনি। তাৎক্ষণিকভাবে দেশে থাকা জাহিদ ও শরিফুলকে কল করেন রাজেশ। ততক্ষণে ফোন বন্ধ করে লাপাত্তা তারা।
প্রতারিত হওয়ার বিষযটি বুঝতে পেরে দেশে ফিরে ১৭ জানুয়ারি রাজেশ গাজীপুরের শ্রীপুর মডেল থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ তদন্ত করে দেশে থাকা শফিকুল ও জাহিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) কাছে সহায়তা চায় পুলিশ। এরই ভিত্তিতে নিজস্ব নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় এটিইউ শফিকুল ইসলাম এবং মো. জাহিদুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে এটিইউ।
এটিইউ পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মাহফুজুল আলম রাসেল জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) পৃথক দুটি অভিযানে ঢাকা জেলার দোহার ও সিঙ্গাইরের গোবিন্দল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন ব্যংকের ১৬টি চেকবই, ৬টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২ লাখ ২২ হাজার ৬শ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এটিইউ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার দুজন আন্তঃদেশীয় প্রতারণা চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা প্রতারণা, হুন্ডি ব্যবসাসহ বিপুল পরিমাণ অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত।
মন্তব্য করুন