প্রায় ২৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের যশোর চৌগাছা শাখার সাবেক ম্যানেজারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত ম্যানেজারের নাম আতিকুল ইসলাম। গ্রাহকের সাথে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার ইকবাল কবির স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে এই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জানা যায়, আতিকুল ইসলাম ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চৌগাছা শাখার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ, স্বাক্ষর জালিয়াতি, চেক জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গত মে মাসে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন বলা হয়, আতিকুল ইসলামের আমলেই ব্যাংকের জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক ও দুর্বল থাকায় শাখায় এ ধরনের জাল-জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। কোনো হিসাব ক্লোজ করার আবেদন আসলে তা বিধিমোতাবেক ক্লোজ করা হয়েছে কিনা তা ম্যানেজার হিসেবে যাচাই না করায় সেসব অ্যাকাউন্ট থেকে পরবর্তীতে জাল-জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ভাউচার চেকিং যথাযথভাবে হয়নি। ভাউটচার চেকিং যথাযথভাবে হলে ২১৯টি ভাউচারের মাধ্যমে ২৯ লাখ ১০ হাজার ৩২৫ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটত না। এসব ক্ষেত্রে ম্যানেজারের তদারকির অভাব পরিলক্ষিত হয়। এই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২২ আগস্ট তাকে বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বরখাস্তকৃত ম্যানেজার আতিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘২০২১ সালে এই জাল-জালিয়াতির অভিযোগে জাহাঙ্গীর নামে এক কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হন। কিন্তু আমি ম্যানেজার হিসেবে তাকে কেন বাঁচায়নি, সেজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তদারকির অভাব ছিল উল্লেখ করে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, আত্মীয়স্বজনের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে নানাভাবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রাহকের ও সরকারি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। এটি করার পর সহকর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা করেন। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক বছরের ব্যবধানে আতিকুল ইসলাম বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে গেছেন। যশোর শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পাঁচতলা বাড়ি, ঢাকার ভাষানটেক ও গাজীপুরে তার সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মন্তব্য করুন