রাজধানীর গুলশান পুলিশ প্লাজার সামনে ডিশ ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার মূল হোতাসহ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
মঙ্গলবার রাতে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে মহাখালী এলাকার সন্ত্রাসী গ্রুপ সেভেন স্টার গ্রুপের সদস্যরাই সুমনকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, সেভেন স্টার গ্রুপের রুবেলের সঙ্গে তার ইন্টারনেট ও ডিশ ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। এর আগে রুবেল তার ব্যবসায়িক সাইট নিয়ে নেয়। পরে মীমাংসার পর সুমন ফের ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। এই ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানের পুলিশ প্লাজার সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে সুমনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন সুমনের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার। সুমনের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন ইউনিয়নের সালাইপুরে। তার বাবার নাম মাহফুজুর রহমান। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে রাজধানীর ভাষানটেক এলাকায় থাকতেন। সুমনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ এবং নিহতের পরিবারের বরাতে জানা যায়, মহাখালীর টিবি গেট এলাকায় ‘প্রিয়জন’ নামে সুমনের ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা ছিল। তিনি মহাখালী এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ দিতেন। আর সেভেন স্টার গ্রুপের রুবেলও মহাখালীতে কেবল টিভি সংযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা করতেন। ২০২০ সালে করোনার সময় রুবেলের সহযোগী জামাল, সেন্টু ও আফজাল মারধর করে সুমনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ সময় তারা কয়েক লাখ টাকার ইন্টারনেট লাইনের তার নিয়ে যান। ওই ঘটনার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে সেই সংযোগ ফের চালু করেছিলেন সুমন। তখন সন্ত্রাসী রুবেলের সহযোগী জামাল ও সেন্টুর নেতৃত্বে মহাখালীর টিবি হাসপাতালের গেট এলাকায় সুমনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে তার দুই হাত ভেঙে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় জামালসহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি। এরপর টিবি হাসপাতাল এলাকার বাসা ছেড়ে দিয়ে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তারা ভাষানটেকের একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. তারেক মাহমুদ জানিয়েছিলেন, সুমন হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। রুবেল গ্রুপের সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবসার দ্বন্দ্ব ছাড়াও অন্য কোনো কারণ ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে।নিহত সুমনের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি ও মারামারির অভিযোগে গুলশান, বনানী ও বাড্ডা থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে।
মন্তব্য করুন