পড়াশোনা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝগড়া হয় ঢাকা সেন্ট্রাল ওমেনস কলেজের ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্রী ফারজানা নাসরিনের। এ নিয়ে ৮ মাস আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান ফারজানা। এরপর মিরপুরে প্রেমিকের বাসায় উঠলে ৮ মাস পরে সেখান থেকে লাশ হয়ে ফেরেন তিনি।
ফারজানাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার প্রেমিক তানজিদ জোবায়ের ফাহিমকে গ্রেপ্তার করে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রিমান্ড শেষে ফাহিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান। এদিন রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক পলাশ খান।
এ সময় আসামির জামিন চান তার পক্ষের আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর ভাই নওশেদ আহম্মেদ বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় ফাহিমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বছরের ২৮ মে আমার বোন ফারজানা ইয়াসমিন আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও যখন আমার ছোট বোন বাসায় ফিরে আসে না, তখন আমাদের সন্দেহ হয় সে কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছে অথবা সম্পর্ক করে কাউকে বিয়ে করেছে।
এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল অনুমান সাড়ে ৪টার দিকে একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আমার মেঝ বোন সাজিয়া সুলতানার ইমু নম্বরে ফোন করে জানায়, সে আমার ছোট বোন ফারজানা নাসরিনকে ২/১ দিনের মধ্যে আমাদের বাসায় নিয়ে আসবে। আমরা অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়।
এরপর ওইদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুনরায় অজ্ঞাত ব্যক্তি আমার মেঝ বোনের ওই ইমু নম্বরে কল করে জানান, আমার ছোট বোন ফারজানা নাসরিন মৃত্যুবরণ করেছে। তখন আমার মেঝ বোন বিষয়টি আমাকে জানায়।
আমি অজ্ঞাত ব্যক্তির প্রদানকৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে নাম জিজ্ঞাসা করলে তার নাম ফাহিম বলে প্রকাশ করেন। এরপর মিরপুর ৬০ ফিট ছাপড়া মসজিদের নিকট এসে তাকে ফোন করতে বলেন। আমি তাৎক্ষণিকভাবে আমার সঙ্গীয় আপন মামাকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুর মডেল থানায় এসে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেই।
মিরপুর মডেল থানা পুলিশ এবং সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট তাৎক্ষণিকভাবে আমাকে সাথে নিয়ে মিরপুর মডেল থানাধীন উত্তর পীরেরবাগ ৩/৮, ৬০ ফিট রোডস্থ আসামি তানজিদ জোবায়ের ফাহিমের ভবনের ৫ম তলায় একটি কক্ষে গিয়ে দেখি আমার ছোট বোন ফারজানা নাসরিনে মৃতদেহ ঘরের মেঝেতে তোষকের উপর শোয়ানো অবস্থায় পড়ে আছে।
এতে আরও বলা হয়, আমাদের ধারণা গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে যে কোনো সময় ১নং আসামি তানজিদ জোবায়ের ফাহিমসহ অজ্ঞাতনামা তিন-চারজন আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে আমার ছোট বোন ফারজানা নাসরিনকে দীর্ঘদিন ঘটনাস্থলে আটক রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে।
মন্তব্য করুন